ছবি
পার্থ প্রতিম চ্যাটার্জী (হলদিয়া)
মেয়েটি ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসে
পড়তে পড়তে আনমনে বই এর পাতায় কখনো বা নোটবুকের ভিতরেই
হোমওয়ার্ক ভুলে
অথবা হাতের তালু বা গাছের পাতায়
আর দেওয়াল জুড়ে শুধু ছবি আর ছবি।
মনের দেওয়ালে ফুটে উঠতো বারবার
মা বাবার কলহ আর অশান্তির ছবি।
সেই ছবি ফুটে উঠতো তার পেন্সিলের আগায়
আপন মনে ছবি আঁকতে আঁকতে
দুচোখ ভরে আসতো জলে।
চোখ থেকে জলের ধারা নামলে
বাবা জড়িয়ে ধরে বুকে
মুছিয়ে দিতো জল
মাথায় বুলিয়ে হাত।
সময়ে অসময়ে
আবদারে অভিযোগে
ডেকে উঠতো বাবা বাবা বলে।
সময় বয়ে গেলো
বাবার সে হাত গেলো দূরে সরে,
মা বাবা আলাদা হলো
মাথার উপরের ছাতা যেন অর্ধেক হলো।
বাবার হাত থেকে দূরে সরে এসে
মা হয়ে উঠলো তার পূর্ণ আকাশ।
মা আবার নতুন সঙ্গী খুঁজে নিলো
জীবনে এলো তার নতুন বাবা,
নতুন করে গড়ে উঠতে থাকলো সব
নতুন ঘরে আসা
নতুন পরিবেশ
নতুন জীবনের অভ্যাস।
এখনো মেয়েটি ছবি আঁকে
খাতার পাতায়
বইয়ের পাতায়
কম্পিউটারের পর্দায়।
দেওয়াল জুড়ে ছবি আঁকতে গেলে
নতুন বাবা ধমক দেয়,
জীবনের ছবি গুলো
বুকে বেদনার মেঘ হয়ে জমা হয়
চোখ থেকে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে।
কান্না আসে বারবার
বাবার হাত আসেনা কান্না মোছাতে,
অভিযোগ আবদারে
নতুন বাবা কে ডেকে উঠতে পারে না
বাবা ও বাবা… বাবা বলে।
ভেঙে যাওয়া জিনিস সারালে
তাকি আর নতুনের মতো হয়?
মেয়েটি তাই বাবার ছবি আঁকে
খাতার পাতায় নয়
বইয়ের পাতায় নয়
শুধু মনের পাতায়
দিস্তার পর দিস্তা ভরিয়ে দিয়ে।