জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি,
ন্যায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যেকোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মত ভারতেও গড়ে উঠেছে নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্হা। কিন্তু লোক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিচারপ্রার্থীদের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রচলিত আদালতগুলির পক্ষে বিভিন্ন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তুলনামূলক ভাবে কম জটিল বিশেষ করে দাম্পত্য কলহ, পারিবারিক বিবাদ, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরােধ, পথ দুর্ঘটনা, বিমা সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন প্রভৃতি দেওয়ানি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে গুজরাটে চালু হয় ‘লোক আদালত’। যদিও আইনগত পরিষেবা শুরু হয় ১৯৮৭ সালে। এবার হাওড়া জেলা জাতীয় লোক আদালতের বিচারকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য হিসাবে ২৪ জুলাই যাত্রা শুরু করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মোল্লা জসিমউদ্দিন। জানা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা প্রায় শতাধিক মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু সরল অথচ ‘হাই প্রোফাইল’ মামলা আছে। ঝুলে থাকা মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষ খুব খুশি।
একজন চিত্র সাংবাদিক হিসাবে জসিমউদ্দিন তার সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন এবং দীর্ঘ প্রায় কুড়ি বছর মফস্বলের সাংবাদিক হিসাবে এই জগতে যুক্ত আছেন । বর্তমানে তিনি বাংলা স্টেটসম্যান পত্রিকার হাইকোর্টের সংবাদদাতা। কয়েকটি পাক্ষিক পত্রিকার এবং জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল ‘বাংলার খবরাখবর’ এর সম্পাদক। দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে যেমন এসেছেন তেমনি বহু সাধারণ মানুষের সঙ্গেও মিশেছেন। প্রসঙ্গত জসিম বাবুর বাবা মহম্মদ নুরুল হোদা মোল্লা ত্রিশ বছর ধরে বিভিন্ন আদালতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থাৎ ছোট বয়স থেকেই তিনি আইনি পরিমণ্ডলে বড় হয়েছেন। ফলে অভিজ্ঞতার ভাণ্ডারটি যথেষ্ট পুষ্ট। এই অভিজ্ঞতা নিয়েই তিনি লোক আদালতের সদস্য হিসাবে যাত্রা শুরু করলেন।
লোক আদালতের সদস্য হিসাবে জসিম বাবু প্রথমেই হাওড়া জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রের অফিস মাস্টার প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তিনি বলেন – আজ তার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। বিচারক পুত্র হিসাবে একটা আলাদা আবেগ ও অনুভূতি জড়িয়ে আছে। সাংবাদিক হিসাবে তিনি যেমন সৎ থাকার চেষ্টা করে গেছেন এখানেও তিনি সততা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। তিনি আরও বলেন – মা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য, সাধারণ মানুষ এবং সর্বোপরি প্রয়াত বাবার আশীর্বাদকে পাথেয় করে এখানেও তিনি সফল হওয়ার চেষ্টা করবেন।