জাপানী পদ্ধতিতে শিক্ষক দিবসে বৃক্ষরোপণ স্কুলের।
সেখ সামসুদ্দিন
আজ জাতীয় শিক্ষক দিবস । একজন মানুষের সফলতার জন্য শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। একজন আদর্শ শিক্ষক কেবলমাত্র পড়াশোনার ক্ষেত্রে নয়, তিনি ছাত্রকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। তিনি তাকে শুধুমাত্র জীবনে সফল হওয়া নয়, কিভাবে একজন ভাল মানুষ হতে হয় শেখাবেন। আর তা একের পর এক করে দেখাচ্ছে মেমারির ক্রিস্টাল মডেল ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। স্কুলে গিয়ে দেখি , প্রিন্সিপ্যাল অরুন কান্তি নন্দী জঙ্গলের দিকে তাক করে গুলতি দিয়ে কি যেন শিকার করছেন ! কৌতুহল নিবারণ করতে গিয়ে জানতে পারলাম শিক্ষক দিবস উপলক্ষে এক অভিনব কর্মসূচির অঙ্গ এটা। করোনা আবহে স্কুল ছাত্র ছাত্রী শূন্য । অনান্য বছরের মতো পরিস্থিতি এবার নয় । প্রতিবছরের মতো অনেক কিছুই এখন সম্ভব হচ্ছে না। যেমন ৫ই জুন সেই ভাবে সম্ভব হয়নি বৃক্ষ রোপনের । তাই আমরা আজকের দিনটি কে বেছে নিয়েছি । প্রকৃতি আমাদের জানান দিচ্ছে আগামী দিনে জঙ্গল সৃষ্টি করতে না পারলে আমাদের অস্তিত্বের সংকটে পড়তে হবে। তাই আমরা জাপানের কৃষিবিদ, কৃষক, লেখক মাসানবু ফুকুওকার দেখানো সিড বল পদ্ধতি অবলম্বন করে জঙ্গল সৃষ্টি করা যায় তা ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে ছাত্রী ছাত্র দের সিড বল তৈরি ও কিভাবে ব্যবহার করে জঙ্গল সৃষ্টি করাযাবে তা শিক্ষিযেছি।
এই ‘সিড বল’ ঠিক কি?
সাধারণ মাটির সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে ছোট ছোট মাটির দলাতে দু-তিনটি বীজ রেখে ছাত্রছাত্রীরা তৈরি করেছে এই বল। সোনাঝুরি, নিম, তেঁতুল, বেল, খেজুর, জাম বীজ রাখা হচ্ছে এই সিড বলে। এই বলই পতিত জমি,রাস্তার ধারে খেলার ছলে ছুরে বা গুলতির সাহায্য অনেক দূরে ছড়িয়ে দেবে,তারপর সেই মাটির দলা জমিতে থেকে আর্দ্রতা সংগ্রহ করে তৈরি হবে এক একটি গাছ যা দিয়ে তৈরি হবে জঙ্গল। বৃক্ষ জগতের এই বিষয়কে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘অ্যাসোসিয়েটেড সাকশেসন’ । তবে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে বর্ষার মৌসুমে সামাজিক বন সৃষ্টির কোনও মিল নেই। করোনা আবহে ছাত্রী ছাত্ররা নিজ নিজ এলাকায় খেলার ছলে এই ভাবে বনসৃজন করবে। অবশেষে কৌতুহল নিবারণ হলো উনি গুলতি দিয়ে পাখি শিকার নয়, আগামী দিনে আমরা যাতে প্রকৃতির ভয়াল রোষের শিকার না হই তার আনুষ্ঠানিক সুচনা করলেন গুলতি সাহায্যে সিড বল ছোঁড়ার মধ্যে দিয়ে। যা সত্যই আজকের জাতীয় শিক্ষক দিবসে পরম প্রাপ্তি।