মোল্লা জসিমউদ্দিন, ১১ মার্চ,
আগামী ২৭ ই মার্চ একুশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। তাই নির্বাচনী প্রস্তুতি তুঙ্গে প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই।পুরুলিয়ার জয়পুর (২৪১ নং) বিধানসভার আসন নিয়ে ছিল তুমুল রাজনৈতিক উৎসাহ উদ্দীপনা। একাধারে গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে এগিয়ে থাকা বিজেপি হয়তো ভেবেছিল ফাকা মাঠে গোল ( জিতবার)দেওয়ার। অপরদিকে শাসক দল তৃণমূল অবশ্য বিকল্প হিসাবে এক নির্দল প্রার্থী প্রস্তুত রেখেছিল।তবে তৃণমূলের অন্দরে ছিল চরম হতাশা।কেননা জয়পুরের তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার একাধারে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবার তিনিই ব্লক তৃণমূল সভাপতি। তাই জয়পুরে বিধানসভা ভোট ঘিরে ছিল সাজোসাজো রব।গত বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যখন দেখাচ্ছিল জয়পুর বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন ‘রিজেক্টেড’। তখন সারা বাংলা জুড়ে তৃনমূলের ২৯১ টি আসনের জায়গায় একটি কমে মনে হচ্ছিল ২৯০ টি আসনে যেন তৃণমূল প্রার্থী! উল্লেখ্য, দার্জিলিঙে ৩ টি আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বিমল গুরুঙের দল কে। যাবতীয় রাজনৈতিক উত্তেজনার অবসান ঘটলো বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে।পুরুলিয়ার জয়পুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার তাঁর কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশের বিরুদ্ধে মামলা টি দাখিল করেছিলেন। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশ টি খারিজ করে দেন।বিচারপতি এদিন এজলাসে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী কে সওয়াল-জবাব পর্বে বলেন ‘ শুধুমাত্র তারিখ ভূলে মনোনয়ন বাতিল করা যায়না।’ বিচারপতি এদিন নির্বাচন কমিশনের শুধুমাত্র তারিখ ভূলের জন্য মনোনয়ন বাতিল কে সামান্য ভূল ( তারিখ ভূল কে) বলে জানান।এহেন সামান্য ভূলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কে সরব হতে দেখা যায় নি এজলাসে। উল্লেখ্য, আগামী ২৭ মার্চ একুশে বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোটগ্রহণের জন্য গত ৯ মার্চ ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।ঝালদা মহকুমা শাসকের অফিসে জয়পুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার তাঁর পেশ করা মনোনয়ন পত্রে ৯ ই মার্চের পরিবর্তে ৮ ই মার্চ লিখে ফেলেছিলেন। আর এতেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন গত বুধবার রাতে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে জয়পুরের তৃনমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল দেখায়।তড়িঘড়ি বিষয়টি ওই রাতেই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কে অবগত করান এই প্রার্থী। অতি দ্রুত তৃনমূল লিগ্যাল সেলের আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার দ্রুত শুনানি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন। সেখানে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে এই মামলার উভয়পক্ষের শুনানিতে বিচারপতি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বাতিল নির্দেশিকা কে খারিজ করে দেন।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, তৃনমূল কংগ্রেস যেখানে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সরব, সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের আজকের এই নির্দেশ শাসক দল তৃণমূল কে অনেকটাই উজ্জীবিত করবে।
জয়পুরে তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের নির্দেশিকা খারিজ হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে
