মুখ্যমন্ত্রী মমতার আগ্রহে টাকা দেওয়া হয়েছে উন্নয়ন পর্ষদকে
ট্যাঙ্ক হলেও পানীয় জলের সমস্যা তীর্থক্ষেত্র বক্রেশ্বরে
খায়রুল আনাম
সারা বছর ধরেই পঞ্চপীঠের জেলা বীরভূমে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। এরমধ্যে যে সব তীর্থক্ষেত্রগুলি রয়েছে তারমধ্যে দুবরাজপুর ব্লকের গোহালিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বক্রেশ্বরেও ভক্তপ্রাণ মানুষজন থেকে শুরু করে পর্যটকদের ভীড় থাকে সারা বছর। বিশেষ তিথি এবং উৎসবে এই ভীড় বেড়ে যায় বহুগুণ। রোগশোক থেকে মুক্তি পেতে এখানকার উষ্ণ প্রস্রবণে স্নান করার একটা রেওয়াজও রয়েছে। পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকেও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন বক্রেশ্বরে। তীর্থক্ষেত্র এবং পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে বক্রেশ্বরকে আধুনিক সুবিধাযুক্ত স্থান হিসেবে আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৭ সালে বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে দেন। তখনই লক্ষ্য করা যায় যে, বক্রেশ্বরকে আধুনিক মানের উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এখানে মানুষের প্রাথমিক চাহিদা পরিস্রুত পানীয় জলেরই চরম সমস্যা রয়েছে। যে সমস্যা না মেটাতে পারলে বক্রেশ্বরকে যে আধুনিক মানের মর্যাদা দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে এলাকার সাংসদ শতাব্দী রায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কাজের কাজ বিশেষ হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে বক্রেশ্বর এলাকায় ভূগর্ভের জল উত্তোলন করে তা ওভার হেড ট্যাঙ্কে তুলে সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় ২০১৯ সালে। জলের উৎস সন্ধান করতে কয়েকটি জায়গায় বোরিং করার পরে বক্রেশ্বর ধামের পাঁচশো মিটারের মধ্যে হরিদাসপুরের মাঝে জলের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই জল পরীক্ষা করে দেখা যায়, পানীয় জল হিসেবে তা উন্নতমানের এবং ব্যবহারযোগ্য। তারপরই সেখানে জলত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করা হয় এবং কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ওভারহেড ট্যাঙ্ক তৈরী করা হয়। পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করার জন্য ২০২১ সালে পাইপ লাইনও বসানো হয় এবং পাড়ায় পাড়ায় জলের কলও দেওয়া হয়। কিন্তু আশ্চর্যের, এতোকিছু কাজ সম্পন্ন করার পরে দেখা যায় যে, বোরিংয়ের জায়গা থেকে ওভারহেড ট্যাঙ্ক পর্যন্ত জল সরবরাহের জন্য যে পাম্পের প্রয়োজন, সেই পাম্পই বসানো হয়নি। যে কাজ আজও সম্পন্ন করা যায়নি। এরফলে ওভারহেড ট্যাঙ্ক, পাইপ লাইন, জলের ট্যাপ বসানো হলেও জল সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ট্যাঙ্কটি এখন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর তার চারপাশ আগাছা ও আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মানুষজন এবং মন্দিরের সেবাইতরা বিগত ১২ ডিসেম্বর জেলাশাসকের কাছে এই কাজটি সম্পন্ন করে বক্রেশ্বরে জল সরবারহের আবেদন জানিয়ে এসেছেন লিখিতভাবে।আর এখন বলা হচ্ছে, এখানে পাম্প বসাতে আরও বছর খানেক লাগবে। যা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছেন মন্দিরের সেবাইত ও এলাকার মানুষজন।
ছবি : বক্রেশ্বর মন্দির।