মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
একুশে বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক ভাষণে তৃণমূল বনাম বিজেপির চলছে জমজমাট লড়াই। ইভিএম মেশিনে ফুটবে কোন ফুল, তা জানা যাবে আগামী ২ রা মে। তবে উস্কানিমূলক মন্তব্য পেশে একাধারে নব্য বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নোটিশ পেয়েছেন। ঠিক তেমনি অনুরুপ অভিযোগে দু দুটি নোটিশ পেয়েছেন এই রাজ্যের শাসক দলের সুপ্রিমো তথা রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুটি নোটিশের মধ্যে একটা অভিযোগ তেমন গুরতর না হলেও আরেক টি অভিযোগ মারাত্মক বলে জানিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। তবে শুক্রবার কলকাতায় একুশে বিধানসভা ভোটের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচার করতে এসে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন – ” কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নোটিশে জবাব দেওয়া উচিত শুভেন্দু – মমতার”। নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযুক্তদের একই পাল্লায় রেখেছেন অমিত শাহ। বঙ্গ বিজয়ের কান্ডারী হিসাবে শুভেন্দু অধিকারী কে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মান্যতা দিলেও নির্বাচন কমিশনের প্রেরিত নোটিশের জবাব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিনে নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্ধী তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ‘বেগম’ সম্বোধন করেছিলেন। এহেন সম্বোধনে তৃণমূল প্রার্থীর অবমাননা হয়েছে দাবি করে লিখিত অভিযোগ তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কে পাঠানো হয়েছিল।তারই পরিপেক্ষিতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে জবাবদিহি চেয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার বারের মধ্যেই জবাবদিহির সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ছিল।তবে শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যম কে কিছুই বলেননি। অপরদিকে দুটি নির্বাচন কমিশনের নোটিশ প্রাপ্ত তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন – ‘এইরকম দশ টা নির্বাচন কমিশনের নোটিশে আমার কিছুই যায় আসেনা’। গত ২৪ মার্চে নির্বাচনী প্রচারে মমতার বিরুদ্ধে হিন্দু মুসলিম মেরুকরণের অভিযোগ উঠেছিল।বিজেপি কে রুখতে সব মুসলিমদের কে তৃণমূল কে ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন মমতা।এটি ছিল প্রথম নোটিশ। তবে ৭ এপ্রিল তৃনমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালনের ডাক মন্তব্যে দ্বিতীয় নোটিশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষ। যার জবাবদিহি করার শেষ সময়সীমা আজ অর্থাৎ শনিবার বেলা ১১ টার মধ্যে। যদি কোন উত্তর না মেলে তাহলে তৃনমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করবার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বলে জানা গেছে। ১৮৬ নং ( সরকারি কর্মী কে কাজে বাঁধা দেওয়া), ১৮৯ নং ( সরকারি কর্মী কে হুমকি), ৫০৫ নং ( অশান্তি তে ইন্ধন জোগানো) ধারা গুলি প্রযোজ্য হতে পারে এই মামলায়। তবে সবটাই নির্ভর করছে আজ এগারো টার মধ্যে কোন উত্তর যায় কিনা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে।তবে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে – ‘নেত্রী বলেছেন যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথাও গন্ডগোল করে থাকে, তাহলে সেখানে মেয়েরা দল বেঁঁধে ঘেরাও করবে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় জওয়ানদের কে।তবে ভোটগ্রহণে ঘেরাও করা মহিলারা আধাআধি ভাবে অংশগ্রহণ করবে’। এখানে যদি ‘গন্ডগোল’ করের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ পর্ব ঠিকঠাক রাখার বার্তা দিয়েছেন মমতা।তাই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন যদি মামলা করে তার আইনী জবাব দেওয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের আইনজীবীরা বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আনসার মন্ডল।