দীর্ঘ ৪৪ বছর পর খুনের অভিযোগে ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সেখ রিয়াজুদ্দিন,বীরভূম:- সিউড়ি অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালত-১ সোমবার খুনের অভিযোগে ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে একমাস জেল। পাশাপাশি বাড়িতে আগুন লাগানোর জন্য সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে একমাস জেল। পাশাপাশি রায় দানের সময় বিচারক জানিয়ে দেন এই সাজার বিরুদ্ধে চাইলে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যাবে। সেই সাথে জেলা আইনি পরিষেবা কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করলে বিনামূল্যে উকিল পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য গত ১৯৮১ সালের ৮ই আগস্ট তৎকালীন ময়ূরেশ্বর থানার কোর্ট গ্রামে খুন হয় তরতাজা নয়জন যুবক। খুন হয়ে যাওয়া নয় যুবক রামপুরহাটের মাড়গ্রামের বাসিন্দা। সেই খুনের ঘটনায় কোর্ট গ্রামের ৭২ জনের নামে মামলা দায়ের হয় ময়ূরেশ্বর থানায়। পুলিশ বাহাত্তর জনকে গ্রেপ্তারও করে। গত দুমাস যাবত স্বাক্ষী গ্রহন চলছিল। একজন পুলিশ অফিসার ও একজন ডাক্তার সহ মোট ৮ জন সাক্ষ্যদান করেন। খুনের দায়ে অভিযুক্ত ৭২ জনের মধ্যে অনেকেই মারা যান। ৫২ জনের মত জীবিত ছিলেন। যারমধ্যে গত শুক্রবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় কোর্ট গ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মাড়গ্রাম থেকে একটি পরিবার ও ছয় যুবক এবং ওই গ্রামের আরো তিন যুবক কোর্ট গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। প্রাণভয়ে ওই নয় যুবক স্থানীয় একটা বাড়িতে আশ্রয় নেয়।গ্রামবাসীরা সেই বাড়িতে লঙ্কা ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় সেক্ষেত্রে একে একে বাড়ির বাইরে বের হতেই কুপিয়ে খুন করা হয় পরপর নয় জনকেই। যাদের মধ্যে নূর হোসেন, শাহজামাল শেখ, আলী হোসেন সহ মোট ৯ জনকেই কুপিয়ে খুন করা হয় সেদিন।দীর্ঘ ৪৪ বছর মামলা চলছিল। যার মধ্যে অনেকেই সাক্ষী দিতে আসেনি।এছাড়া মামলা ফিরে এসেছে হাইকোর্ট থেকে নিন্ম কোটে, যার পরিপ্রেক্ষিতেই মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলে বলে আইনজীবীদের সূত্রে খবর। নিহতদের পক্ষ থেকে এসএম বদিউজ্জামান জানান নিহত নয়জনের মধ্যে ৬ জন সহোদর ভাই,বাকি তিনজন মামাতো চাচাতো ভাই বলে জানান। এছাড়াও আজকে আদালতের সাজা ঘোষণার প্রেক্ষিতে তাদের আইনজীবী সহ নিহতদের পরিবারবর্গ সন্তোষ প্রকাশ করেন।