মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’ বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের এই কবিতার লাইন আপামর বাঙালির কাছে অত্যন্ত সুপরিচিত। পশ্চিম বর্ধমানের চুরুলিয়ায় এই কবির জন্ম, এরপর মঙ্গলকোট, বর্ধমান, কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে স্মৃতি রেখে বাংলাদেশে চিরসাহিত নজরুল। তবে তাঁর লেখা কেউ ভুলেনি, কেউ ভূলবেওনা।এহেন কবির যথার্থ উত্তরসূরী হিসাবে বাংলায় সমাদৃত হচ্ছেন কবির নাতনি সোনালি কাজী।তিনিও স্বতন্ত্রভাবে একাধারে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে স্বকীয়তা যেমন রেখে চলেছেন।ঠিক তেমনি সমাজসেবায় বিশেষত দুস্থ অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো যেন তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ইদ কিংবা পুজোর সময়কালে নুতন জামাকাপড় নিয়ে হাজির তিনি।আবার করোনা আবহে অভুক্তদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন সোনালী। সম্প্রতি এক বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে ‘অন্নদূর্গা’ সম্মান পেয়েছেন। আবার আগামী ৩ রা মার্চ মঙ্গলকোটের অজয় নদের তীরে কোগ্রামে কুমুদ সাহিত্য মেলায় ‘নজরুল রত্ন’ পাচ্ছেন। চুরুলিয়ায় ‘নজরুল একাডেমি’র সাহিত্য সম্পাদক হিসাবে ২০১৭ সাল থেকে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।১৯৯১ সালে ‘দোলনচাঁপা’ নামে এক সংগঠনের মাধ্যমে আসানসোল, দুর্গাপুর, কলকাতা সহ বিভিন্ন প্রান্তে সমাজসেবামূলক কাজে রয়েছেন। বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের সেই ১৯২২ সালে ‘ধুমকেতু’ পত্রিকার আধুনিক সংস্করণ ‘নবধুমকেতু’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদিকা হিসাবে মফস্বল কবিদের কাছে এক প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছেন সোনালি। উল্লেখ্য, এই ধুমকেতু পত্রিকা টি বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলাম ৩২ টির মত সংখ্যা প্রকাশ করে সেসময় ইংরেজদের কাছে দুচোখে বিষ হয়ে উঠেছিলেন। আকাশবাণী রেডিওতে সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে যখন সোনালী কাজী আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।তখন বাঙালি যেন কাজি নজরুল ইসলামের প্রতিচ্ছবি দেখছিল।বিদ্রোহী কবির উত্তরসূরী সোনালী কাজী বলেন – ” নজরুল ভিটা চুরুলিয়া কে রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের মত দেখতে চায়।আশা রাখি বিদ্রোহী কবির জন্মভিটে সেই মর্যাদা পাবে”। কলকাতার তালতলা লেনে কবি ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি লিখেছিলেন। সেই বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ লেখার শতবর্ষ পালন হতে চলেছে দোলনচাঁপা সংগঠনের মাধ্যমে । সেই উপলক্ষে বিদ্রোহী কবির স্মৃতি বিজড়িত মঙ্গলকোটের মাথরুন উচ্চবিদ্যালয় থেকে শোভাযাত্রা করে তা কবির স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা আরেক বিখ্যাত পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের বসতভিটে আসবে।আর মঙ্গলকোটের এই পুরো শোভাযাত্রার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু) কে।সম্প্রতি দুর্গাপুরের ‘আন্তরিক’ সাহিত্য পত্রিকা,কলকাতার ‘অমৃতম’, দুর্গাপুরের ‘গ্রিন ভলিন্টিয়ার’, আসানসোলে ‘অঙ্গীকার’ এর সাথে দোলনচাঁপা সংস্থার যৌথ সভায় দক্ষিণবঙ্গের গুণীজনদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে শতাধিক কবি সাহিত্যিক এসেছিলেন সেই মজলিসে।
ছবি – ফাইল