খায়রুল আনাম,
কথায় বলে ‘ধর্ম সঙ্কট’। সেই ধর্ম সঙ্কটেই হয়তো এবার পড়েছে সিপিএম। এতদিন পর্যন্ত সিপিএম ধর্মের ছোঁয়াচ বাঁচিয়েই চলেছে বলে মনে করা হতো, তাই-ই শুধু নয়, সিপিএম ধর্মের সঙ্গে না জড়িয়েই চলতো বলে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরী হয়েছিলো। এরাজ্যে এর জাহির ছিল অতিমাত্রায়। তুলনায় দক্ষিণভারতে অবশ্য সিপিএম উৎসব-অনুষ্ঠানে ধর্মের অনুষঙ্গে থাকার ক্ষেত্রে তেমন কোনও বিরোধে যায়নি। কিন্তু এবার দলের যে ২৪ তম পার্টি কংগ্রেস এপ্রিলে মন্দির শহর হিসেবে পরিচিত তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে হতে চলেছে তাতে, সিপিএম সামগ্রিকভাবে ধর্মের আশ্রয়ে থাকবে না কী, ধর্মকে উপেক্ষা করে চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। সিপিএম বলছে, ধর্মে বিশ্বাসী মানুষের মধ্যে গিয়ে দলকে কাজ করতে হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার যে এক জিনিস নয়, সেই তফাৎ তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে। উৎসব ও সামাজিক জমায়েতে বেশি করে অন্তপ হতে হবে, যাতে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যে সে সবের ব্যবহার না হয়। আর সেইসাথে সিপিএম হীনবল হলেও যে হেতু নিজেদের গোয়ার্তমি ছাড়তে না রাজ তাই এবার ক্ষমতা হারানোর প্রান্তসীমায় পৌঁছে গিয়েও একই সঙ্গে বিজেপি এবং আরএসএস-এর ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির মোকাবিলা করার কথা বলছে। এদিকে শতবর্ষে এসে সিপিআই এখন তাদের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার কথা স্বীকার করে নিচ্ছে। কিন্তু তাদের শরীর ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা সিপিএম তাদের দুর্দশার কথা স্বীকার করতেও পারছে না। সমাজতান্ত্রিক সমাজের স্বপ্ন ফেরি করা সিপিএম এখন এমনই এক অসহায় অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে। জানা নেই, এর ভয়ঙ্কর পরিণতিটা কী?