মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
আগামী ১ এপ্রিল রাজ্যের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে রয়েছে বহু চর্চিত নন্দীগ্রাম বিধানসভার ভোট।তাই তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট সেখ সুফিয়ানের ওয়ারেন্ট নিয়ে ছিল আইনী জটিলতা। কেননা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে হলদিয়া আদালতে পুরাতন মামলায় ইস্যু হয়েছিল ওয়ারেন্ট। তাই ওয়ারেন্ট জারী থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে ভোটপর্ব পরিচালনা করা মুস্কিল ছিল সেখ সুফিয়ানের কাছে।শুক্রবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত শুনানির জন্য আবেদনকারী সেখ সুফিয়ান কে জানিয়ে দেয় – ‘ এই মামলাটি তারা গ্রহণ করেছে, আগামী দু সপ্তাহ সেখ সুফিয়ান কে গ্রেপ্তার করা যাবেনা’। জানা গেছে, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে পারে। এহেন সুপ্রিম রক্ষাকবচ পেয়ে উজ্জীবিত তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে আইনীভাবে বড়সড় ধাক্কা পেয়েছিল রাজ্য সরকার।রাজ্যের পালাবদলের দশ বছর অতিক্রান্ত হলেও কখনো নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারে রাজ্যের সক্রিয়তা দেখা যায়নি।তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানে যাবতীয় ফোকাস এখন পূর্ব মেদিনীপুর। এহেন নন্দীগ্রামে গত ২০০৭ সালে খুন – অপহরণ সহ নানান ১৩ টি ফৌজদারি মামলায় ৪০ জন অভিযুক্তদের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন নিম্ন আদালত অর্থাৎ হলদিয়া মহকুমা আদালতে রেখেছে রাজ্য সরকার। গুরতর ধারায় এই ফৌজদারি মামলা গুলি কি শুধুমাত্র রাজ্যের আইনজীবীর আবেদনে প্রত্যাহার করা যায়? যদি যায় তাহলে রাজ্যের অন্যান্য ফৌজদারি মামলা গুলির কি হবে? এতে অপরাধ প্রবণতা ক্রমশ বেড়ে যাবে রাজ্যের রাজনৈতিক স্বার্থ দেখতে গিয়ে।এইরূপ নানান দাবি কে সামনে রেখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে দারস্থ হন আইনজীবী নীলাঞ্জন অধিকারী এবং দীপক মিশ্র।তাঁরা জনস্বার্থ মামলাটি দাখিল করেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। সেখানে হলদিয়া মহকুমা আদালতে এই ১০ টি ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের উপর স্থগিতাদেশ জারী করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয় এই মামলার শুনানিতে পর্যবেক্ষণে রাজ্য কে তিরস্কার পর্যন্ত করে থাকে এই ডিভিশন বেঞ্চ। ‘প্রতিটি নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের তরফে মামলা প্রত্যাহারের প্রবণতা ঠিক নয়’ বলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়।নন্দীগ্রাম কান্ডে ভোটের মুখে কলকাতা হাইকোর্টের এহেন স্থগিতাদেশ জারী শাসক দল কে চরম বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিল মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কেননা এই নন্দীগ্রামেই এবার তৃনমূল প্রার্থী রাজ্যের খোদ মুখ্যমন্ত্রী! বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে – ‘রাজ্যে পালাবদলের দশবছর পর কেন জমি আন্দোলনের ফৌজদারি মামলা গুলি প্রত্যাহারের কথা মনে হলো তৃণমূলের? ‘ এরপরই শুক্রবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে সেখ সুফিয়ানের আবেদনটি গ্রহণ করে থাকে আদালত। সেইসাথে জানিয়ে দেয় আগামী দু সপ্তাহ গ্রেপ্তার করা যাবেনা সেখ সুফিয়ান কে।