নন্দীগ্রাম মামলায় ফেরাররা সাময়িক স্বস্তি পেল কলকাতা হাইকোর্টে

Spread the love

নন্দীগ্রাম মামলায় ‘ফেরারদের’ হাইকোর্টে সাময়িক স্বস্তি 

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,


রাজ্যের হাইভোল্টেজ আসন নন্দীগ্রামে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ। একুশে বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোটে সবথেকে আঁটোসাটো নিরাপত্তা বলয় করে রেখেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই হলদিয়ার এসডিপিও এবং মহিষাদলের সার্কেল ইন্সপেক্টর কে ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। নন্দীগ্রাম থানায় আনা হয়েছে পুলিশসুপার পদমর্যাদা পূর্ণ অফিসার কে।যা এখনও অবধি ভোটগ্রহণ পর্বে সবথেকে বড় চমক বলা যায়। আর এখান থেকেই যত জল্পনার হয়েছে সুত্রপাত। বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে হলদিয়া আদালতের জারি করা ওয়ারেন্ট খারিজের আবেদন জানানো হলেও তা এই বিশেষ বেঞ্চ প্রথম পর্বে পিটিশন টি গ্রহণ করেনি।তবে পরে আবার আবেদন জানানো হলে তা গ্রহণ করে আগামী ৫ এপ্রিল অবধি গ্রেপ্তারিতে সাময়িক স্বস্তি দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৫ এপ্রিল অবধি যেমন এই মামলায় যারা জেলবন্দি তারা জামিন পাবেনা।ঠিক তেমনি যারা জেলের বাইরে তাদের কে আগামী ৫ এপ্রিল অবধি গ্রেপ্তার করা যাবেনা।যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় সেখ সুফিয়ান কে ইতিমধ্যেই দু’সপ্তাহের আইনী রক্ষাকবচ দিয়েছে। তাই এক্ষেত্রেও আগামী ৭ এপ্রিল অবধি বাকিদের সাময়িক স্বস্তি দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। গত শুক্রবার  সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত শুনানির জন্য আবেদনকারী সেখ সুফিয়ান কে জানিয়ে দেয় – ‘ এই মামলাটি তারা গ্রহণ করেছে’, নির্দেশ দেয় -‘আগামী দু সপ্তাহ সেখ সুফিয়ান কে গ্রেপ্তার করা যাবেনা’। এহেন সুপ্রিম রক্ষাকবচ পেয়ে উজ্জীবিত তৃণমূল কংগ্রেস। সম্প্রতি  কলকাতা হাইকোর্টে আইনীভাবে বড়সড় ধাক্কা পেয়েছিল রাজ্য সরকার।রাজ্যের পালাবদলের দশ বছর অতিক্রান্ত হলেও কখনো নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারে রাজ্যের সক্রিয়তা দেখা যায়নি।তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানে যাবতীয় ফোকাস এখন পূর্ব মেদিনীপুর।  এহেন নন্দীগ্রামে গত ২০০৭ সালে খুন – অপহরণ সহ নানান ১৩ টি ফৌজদারি মামলায় ৪০ জন অভিযুক্তদের মামলা প্রত্যাহারের আবেদন নিম্ন আদালত অর্থাৎ হলদিয়া মহকুমা আদালতে রেখেছে রাজ্য সরকার। গুরতর ধারায় এই ফৌজদারি মামলা গুলি কি শুধুমাত্র রাজ্যের আইনজীবীর আবেদনে প্রত্যাহার করা যায়?  যদি যায় তাহলে রাজ্যের অন্যান্য ফৌজদারি মামলা গুলির কি হবে?  এতে অপরাধ প্রবণতা ক্রমশ বেড়ে যাবে রাজ্যের রাজনৈতিক স্বার্থ দেখতে গিয়ে।এইরূপ নানান দাবি কে সামনে রেখে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে দারস্থ হন আইনজীবী নীলাঞ্জন অধিকারী এবং দীপক মিশ্র।তাঁরা জনস্বার্থ মামলাটি দাখিল করেন। সম্প্রতি  কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলে। সেখানে হলদিয়া মহকুমা আদালতে এই ১০ টি ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের উপর স্থগিতাদেশ জারী করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয় এই মামলার শুনানিতে পর্যবেক্ষণে রাজ্য কে তিরস্কার পর্যন্ত করে থাকে এই ডিভিশন বেঞ্চ। ‘প্রতিটি নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের তরফে মামলা প্রত্যাহারের প্রবণতা ঠিক নয়’ বলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়।নন্দীগ্রাম কান্ডে ভোটের মুখে কলকাতা হাইকোর্টের এহেন স্থগিতাদেশ জারী শাসক দল কে চরম বেকায়দায় ফেলে দিয়েছিল  মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কেননা এই নন্দীগ্রামেই এবার তৃনমূল প্রার্থী রাজ্যের খোদ মুখ্যমন্ত্রী! বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে – ‘রাজ্যে পালাবদলের দশবছর পর কেন জমি আন্দোলনের ফৌজদারি মামলা গুলি প্রত্যাহারের কথা মনে হলো তৃণমূলের? ‘ এরপরই গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সেখ সুফিয়ানের আবেদনটি গ্রহণ করে থাকে আদালত। সেইসাথে জানিয়ে দেয় আগামী দু সপ্তাহ গ্রেপ্তার করা যাবেনা সেখ সুফিয়ান কে।বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট হলদিয়া আদালতে নন্দীগ্রাম মামলায় আগামী ত এপ্রিল অবধি তদন্তকারী সংস্থা কোন কড়া অবস্থান (গ্রেপ্তার) নিতে পারবেনা বলে জানিয়ে দিলো। যারা জেলে রয়েছে এই মামলায় তারা যেমন জামিন পাবেনা ঠিক তেমনি বাকি ফেরারদের বিরুদ্ধে আগামী ৫ এপ্রিল অবধি গ্রেপ্তার করা যাবেনা বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *