নাগরিক পরিষেবায় বঞ্চনার পেছনে মামলার দীর্ঘসূত্রতা, বিজেপি কে ‘জবাব’ দিতে চায় মানিকতলা 

Spread the love

নাগরিক পরিষেবায় বঞ্চনার পেছনে মামলার দীর্ঘসূত্রতা, বিজেপি কে ‘জবাব’ দিতে চায় মানিকতলা 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

আজ অর্থাৎ বুধবার রাজ্যের ৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে।উত্তর কলকাতার মানিকতলা বিধানসভা তার মধ্যে অন্যতম। টানা ২ বছরের বেশি সময়কাল এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক না থাকার দরুন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা নাগরিক পরিষেবা থেকে অনেকটাই বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ ।বিধায়কের বিভিন্ন শংসাপত্র প্রদান থেকে বিধায়ক তহবিলের আর্থিক অনুদানে উন্নয়ন না হওয়াটার পেছনে গতবারের বিজেপি প্রার্থী ( এবারেও বিজেপি প্রার্থী)  কল্যাণ চৌবে কে অনেকেই দায়ী করেন দীর্ঘ আইনী প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার জন্য। সুপ্রিম কোর্টে চরম তিরস্কৃত হওয়ার পর কলকাতা হাইকোর্টে বাধ্য হয়ে মামলা প্রত্যাহার করেন কল্যাণ। সম্প্রতি  গত বিধানসভার ভোটে বিজেপি প্রার্থী  কল্যাণ চৌবে কে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের ইলেকশন পিটিশন প্রত্যাহার করার আবেদন মঞ্জুর করে থাকে  কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মামলাকারীর আর্জি মেনে মামলা প্রত্যাহার করার অনুমতি দেন। রাজ্যে যে হাতেগোনা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যাঁরা টানা বিধায়ক হয়েছেন।তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পান্ডে।যিনি টানা ৯ বার বিধায়ক ছিলেন উত্তর কলকাতা এলাকায়। জানা গিয়েছে, গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের বিধায়ক সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর ওই কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরি হয়।১৯৫১ সালের জন প্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কোন বিধায়কের ইস্তফা এবং মৃত্যুর কারণে কোনও বিধানসভা কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরি হলে সেই কেন্দ্রে শূন্যতা তৈরির দিন থেকে ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা বাধ্যতামূলক। তবে  সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর পর বছর খানেক ঘুরে গেলেও তেমনটা হয়নি। কারণ গত বিধানসভা নির্বাচনে সাধন পাণ্ডে মানিকতলা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরেই গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে।মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের হয়েছিল। সেখানে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েন কল্যাণ। কারণ তিনি হাইকোর্টে মামলা করলেও শুনানিতে বার বার মুলতবি চাইছিলেন। আর তাতেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট।দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট  হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়,-‘ দৈনিক শুনানি করে দ্রুত মামলার এর নিষ্পত্তি করতে হবে’।  ৩০ জুন সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তারই মধ্যে গত গত ২৯ এপ্রিল, হাইকোর্টে দায়ের হওয়া ‘ইলেকশন পিটিশন’ প্রত্যাহারের আবেদন জানান কল্যাণের আইনজীবী। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে তাঁর মক্কেল এই মামলা তুলে নিতে চান। তার পরিপ্রেক্ষিতেই চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। কল্যাণ চৌবের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিল  কলকাতা হাইকোর্ট। গত ২০২১ সালেও জেতেন তৃণমূল প্রার্থী সাধন পান্ডে । সেবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। হেরে গিয়ে কল্যাণ মানিকতলার ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন। এদিকে ২০২২ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রয়াত হন সাধন পাণ্ডে। তবে সেই মামলার কারণে এখনও উপনির্বাচন হয়নি ওই কেন্দ্রে।এরইমধ্যে কল্যাণের বারবার অনুপস্থিতির কারণে হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে গত মাসে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত কল্যাণকে তীব্র ভর্ৎসনা করে। আজ অর্থাৎ বুধবার রাজ্যের ৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচন রয়েছে। তার মধ্যে উত্তর কলকাতার মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রটি হেভিওয়েট আসন বলে পরিচিত। গত মঙ্গলবার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে ভোটকর্মীরা নিজ নিজ ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের দিকে রওনা দেন।তার আগে তারা মিলিয়ে নেন ভোটগ্রহণের জন্য যাবতীয় সামগ্রী তারা পেয়েছেন কিনা? সেই সঙ্গে ইভিএম পরীক্ষাও করে নেন। ডিসিআরসি সেন্টারে এই প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (নর্থ) অভিষেক গুপ্তা গত মঙ্গলবার  ডিসিআরসি সেন্টার পরিদর্শন করেন। কলকাতার মানিকতলার পাশাপাশি  উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচন রয়েছে । দীর্ঘদিন পর মানিকতলা  কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। লোকসভা ভোটের পর মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চর্চা অব্যাহত।মানিকতলা বিধনসভা সভা কেন্দ্র থেকে এবার তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পান্ডে। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবে(গতবারেরও প্রার্থী ছিলেন)। বামেদের পক্ষ থেকে লড়ইয়ে নেমেছেন রাজীব মজুমদার। ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে তৎপর জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *