ইন্দ্রজিৎ আইচ
………………………………………….
বেঙ্গল রেপার্টরি বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে পারফর্মিং আর্টের ক্ষেত্রে কাজ করছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক স্টেজ পারফরম্যান্স করেছে তারা।
উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা হল- মনন, বাসনা, অশ্বত্থামা, দ্য ওয়ার মেশিন, আবাহন, কথা-কর্ণভার, স্বর্ণ-সংহার, ঝুলন, জশন-এ-রঙ্গ ইত্যাদি। ভারত রঙ্গ মনোভাব, থিয়েটার অলিম্পিক সহ নানান আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অনুষ্ঠানে এই দলটি অংশগ্রহণ করেছে।
গ্রুপের শিল্পীরা নিয়মিত পারফর্মিং আর্ট অনুশীলন, গবেষণা এবং তীব্র প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকে। ভারতীয় নাট্যতত্ত্ব ও কলার অনুশীলনে জোর দেয় বেঙ্গল রেপার্টরী।
অঙ্গশুদ্ধি ও অঙ্গিকাভিনয়ের উপর দলটি বিশেষভাবে যত্নবান। শুরু থেকেই হঠযোগ অনুশীলন রেপার্টরীর অপরিহার্য অংশ। সদস্যদের আবৃত্তির অনুশীলন এবং প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা হয়।
বেঙ্গল রেপার্টরী সর্বদা তার সদস্য ও শ্রোতাদের মধ্যে ভারতীয় দর্শন এবং আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে সচেষ্ট ।
নাটক * কথা – কর্ণভার *
শুধু অভিনয় নয়, আলো, মঞ্চ ও পোশাক সবেতেই আছে অভিনবত্বের ছোঁয়া
ইন্দ্রজিৎ আইচ
………………………………………….
বেঙ্গল রেপার্টরি বিগত প্রায় ১২ বছর ধরে পারফর্মিং আর্টের ক্ষেত্রে কাজ করছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক স্টেজ পারফরম্যান্স করেছে তারা।
উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা হল- মনন, বাসনা, অশ্বত্থামা, দ্য ওয়ার মেশিন, আবাহন, কথা-কর্ণভার, স্বর্ণ-সংহার, ঝুলন, জশন-এ-রঙ্গ ইত্যাদি। ভারত রঙ্গ মনোভাব, থিয়েটার অলিম্পিক সহ নানান আন্তর্জাতিক ও জাতীয় অনুষ্ঠানে এই দলটি অংশগ্রহণ করেছে।
গ্রুপের শিল্পীরা নিয়মিত পারফর্মিং আর্ট অনুশীলন, গবেষণা এবং তীব্র প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকে। ভারতীয় নাট্যতত্ত্ব ও কলার অনুশীলনে জোর দেয় বেঙ্গল রেপার্টরী।
অঙ্গশুদ্ধি ও অঙ্গিকাভিনয়ের উপর দলটি বিশেষভাবে যত্নবান। শুরু থেকেই হঠযোগ অনুশীলন রেপার্টরীর অপরিহার্য অংশ। সদস্যদের আবৃত্তির অনুশীলন এবং প্রশিক্ষণে উৎসাহিত করা হয়।
বেঙ্গল রেপার্টরী সর্বদা তার সদস্য ও শ্রোতাদের মধ্যে ভারতীয় দর্শন এবং আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে সচেষ্ট ।
সম্প্রতি ৪ঠা আগস্ট রবিবার, ভাস রচিত কর্ণভারম এবং রবীন্দ্রনাথের কর্ণ-কুন্তী-সংবাদ এই দুটি রচনার সংশ্লেষ ঘটিয়ে বেঙ্গল রেপার্টরীর প্রযোজনা ‘কথা-কর্ণভার’ মঞ্চস্থ হল কলকাতার জ্ঞান মঞ্চে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের দর্শকরা উপস্থিত ছিলেন এই বিখ্যাত সাহিত্যকর্মের নাট্য রূপান্তরের সাক্ষী হতে। সুমন সাহার পরিচালনায় এই কালজয়ী বিষয়টি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপিত হয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা কর্ণের নৈতিক এবং দার্শনিক দ্বিধাগুলির উপর জোর দেয়, চরিত্রটির অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব এবং দৃঢ়তা তুলে ধরে।
নাটকের প্রতি ক্ষেত্রে অপূর্ব প্রয়োগ নৈপুণ্য – সে বুদ্ধিদীপ্ত মঞ্চ পরিকল্পনা থেকে নানা সরঞ্জামের প্রতীকী ব্যাবহার, সঙ্গীত, কুশীলবদের দলবদ্ধ শৈল্পিক সমন্বয় এবং সর্বোপরি পরিচালক সুমন সাহার কর্ণের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় একটার পর একটা মুগ্ধকর নাট্য-মুহূর্তের জন্ম দিয়েছে।
সঙ্গীতে মনিত পল (সরোদ), শুভাসিস সরকার (তালবাদ্য) অনুপ ঘোষ (সহকারী পারকাশনিস্ট), এবং সাম্যব্রত মুখার্জী (এসরাজ) তাঁদের পারফরম্যান্সে অনবদ্য ছিলেন। তাঁদের অসাধারণ পারফরম্যান্স নাটকটিকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যায়। সংস্কৃত নাটকের ধারা অনুযায়ী সঙ্গীত সহযোগে মঙ্গলাচরণ, সভাপূজা ইত্যাদি তার সাথে বাংলার ঢাকের প্রয়োগ অত্যন্ত সুবিবেচিত যার সঙ্গীত আয়োজনে ছিলেন শুভাশিস সরকার। মহাকাব্যের বিপুল ঘটনা স্রোত থেকে কর্ণের সঙ্গে জড়িত তিনটি ঘটনা কথা-কর্ণভারে একে একে বর্ণিত হয়। কর্ণকে কুন্তীর(অভিনয়ে পুজা রায়) নিজের পরিচয় জানিয়ে পাণ্ডব শিবিরে যোগদানের আহ্বান, ইন্দ্রের ( সঞ্জয় মুখার্জী) ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে কর্ণের কাছ থেকে তার কবচ-কুণ্ডল দান গ্রহণ এবং অস্ত্রশিক্ষার সময় পরশুরামের অভিশাপ। পরশুরাম পর্বে কিশোর কর্ণের ভূমিকায় পিয়াংকা চক্রবর্তীর অভিনয় অভিভূত করেছে। নাটকটিতে আরেকটি বিশেষ সংযোজন কৃষ্ণের(চন্দ্রাণী সরকার)নি:শব্দ উপস্থিতি সারা নাটকটি জুড়ে।
সহায়ক অভিনেতারা - হৃদয় পাল, অঙ্কুর ঘোষ, সম্রাট রায়, দেবজিত রায়, পারমিতা মন্ডল এবং সঞ্চারী মুখার্জী, গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, প্রতিটি তাদের নিজ নিজ ভূমিকার মাধ্যমে পুরো প্রযোজনার উপর প্রভাব ফেলেছেন। এই নাটকে ঐতিহ্যগত থিমগুলির সাথে আধুনিক মঞ্চায়নের কৌশলগুলির সংমিশ্রণটি প্রশংসিত হয়েছে, যা অভিজ্ঞ থিয়েটারপ্রেমী এবং নতুনদের উভয়ের-ই সমান ভাবে মন ছুঁয়ে গেছে। সব মিলিয়ে সকলের দেখার মতন প্রযোজনা এই নাটক।