নাবালিকার ছিন্ন ভিন্ন বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের দ্বিতীয় দিনেও এলাকা উত্তপ্ত, ধর্ষণ, খুনের অভিযোগে ধৃত স্কুল শিক্ষক
সেখ রিয়াজুদ্দিন বীরভূম
বাল্যবিবাহ ও নাবালিকা মাতৃত্ব রোধে জেলা জুড়ে জেলা শাসকের উদ্যোগে জেলার প্রতিটি উচ্চ বিদ্যালয়ে একযোগে উচ্চারিত হয়- জেলা জুড়ে একস্বর, বাল্যবিবাহ রোধ কর।যে কর্মসূচিতে পড়ুয়াদের সাথে শিক্ষকদের ভুমিকাও ছিল যথেষ্ট। অথচ নাবালিকা খুনের ঘটনায় শিক্ষকের ভুমিকায় ছি ছি করছে বিভিন্ন স্তরের লোকজন।সদ্য সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে তারই বিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক মনোজ পাল ধর্ষণ এবং টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় নালার ওপর ফেলে দেয় বলে মৃতার পরিবারের দাবি। ছিন্ন ভিন্ন বস্তাবন্দি অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকা নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে এলাকায় শুরু হয়েছে নানান সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সহ বিক্ষোভ প্রদর্শন। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি পরিবারের লোকজন সহ গ্রামবাসীরাও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।গত ২৮ শে আগষ্ট টিউশনি পড়তে যাওয়ার পর থেকে রহস্যজনক নিখোঁজ হয়ে যায়। যদিও সেই রাতে নিখোঁজ নাবালিকার মা স্থানীয় থানায় ডাইরি করেন। এমনকি উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সেই মোতাবেক পুলিশ শিক্ষককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিন্তু কোনো কিছু উদ্ধার হয়নি। পরবর্তীতে ফের আটকের সময় শিক্ষক তার কূকীর্তির কথা স্বীকার করতেই টুকরো টুকরো ছিন্ন ভিন্ন বস্তাবন্দি অবস্থায় নালার ওপর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তবে শরীরের কোমর থেকে নীচের অংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এনিয়ে এলাকায় ক্ষোভ পুলিশ আগেভাগেই কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলে হয়তো নাবালিকাকে আটক বা বন্দি অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা থাকতো। কিন্তু উদ্ধার করতে এত বিলম্বের জন্য অকালে ঝরে গেল একটা তরতাজা প্রান। বুধবার রামপুরহাটের বারোমেশিয়া গ্রামের এক নাবালিকার বস্তাভর্তি পচা গলা দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শ্যামপাহারি শ্রী রামকৃষ্ণ শিক্ষা পীঠ স্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক মনোজ পালকে গ্রেফতার করে এবং রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে ৯ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। তারপর দিনভর চলে উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার স্কুলে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা আসতেই উত্তেজিত জনতা উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মারধর করে পুলিশের সামনেই। কোনরকমে পুলিশ উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। পুরো স্কুল চত্বর চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তারপর শ্যামপাহাড়ী শ্রী রামকৃষ্ণ শিক্ষা পীঠ স্কুলের সামনে বাঁশ লাঠি ফেলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা।যার জেরে রামপুরহাট থেকে ঝাড়খন্ড বিহার যাওয়ার রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার নেতৃত্ব রামপুরহাট থানার সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। তাদের দাবি ধৃত শিক্ষক তৃনমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের সদস্য হবার ফলে পুলিশ ধরে পরে ছেড়ে দেয়। তদন্তেও গাফিলতি । পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে সেই সাথে শাসক দলের প্রতিও ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি এধরনের কাজ একজনের পক্ষে সম্ভব নয় আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করা এবং উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিজেপির মিছিল ও বিক্ষোভ প্রদর্শন।