নারদায় সুপ্রিম ধাক্কা সিবিআইয়ের, চার্জশিটের দিনে গ্রেপ্তার কেন? বৃহত্তর বেঞ্চ

Spread the love

নারদায় ‘সুপ্রিম’ ধাক্কা সিবিআইয়ের, চার্জশিটের দিনে গ্রেপ্তার কেন? বৃহত্তর বেঞ্চ

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
একই দিনে দু তরফে ধাক্কা খেল নারদা মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসে ক্রুটিপূর্ণ আবেদনের জন্য খারিজ হয়েছে সিবিআইয়ের আপিল পিটিশন। আবার কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে বেশকয়েটি অস্বস্তিকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে সিবিআই কে। সাঁড়াশি চাপে ক্রমাগত আইনীভাবে বিপাকে সিবিআই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি চললেও কোন নির্দেশিকা জারি করেনি এই বেঞ্চ। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডাল থাকছেন না।তাই বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে নারদা মামলায় শুনানির রয়েছে। তবে ইয়াস নামে ঘূর্ণিঝড় সেদিন আছড়ে পড়ার কথা কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তাই কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বুধবার আদৌও হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহান খোদ বিচারপতিরাও।আপাতত আরও দুদিন গৃহবন্দী থাকতে হচ্ছে নারদা মামলায় ধৃত রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি – ফিরহাদ হাকিম, তৃনমূল বিধায়ক মদন মিত্র সহ কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভনদেব চট্টপাধ্যায়দের কে। গত ১৭ মে সকালবেলায় এঁরা সিবিআইয়ের হাতে নারদা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওইদিনই সিটি সেশন কোর্টে সিবিআই এজলাসে নারদা মামলায় ধৃতদের শর্তসাপেক্ষে অন্তবর্তী জামিনের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায়। ওইদিন রাতেই কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চে নিম্ন আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ আদায় করে নেয় সিবিআই। গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চে ধৃতদের নিয়ে দুই বিচারপতির মতবিরোধ দেখা যাওয়ায় মধ্যবর্তী হিসাবে গৃহবন্দী নির্দেশিকা জারি করা হয়। ওইদিনই পাঁচ সদস্যের বিচারপতিদের নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গঠনের নির্দেশিকা জারি করা হয় হাইকোর্টের তরফে।এই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত রবিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইয়ের এক ডজন ত্রুটিপূর্ণ পিটিশনের জন্য আবেদন টি খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে আজ বেলা ১১ টা থেকে ১ টা ৩০ মিনিট অবধি পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলে। সেখানে হাইকোর্টের দুই সিনিয়র বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সৌমেন সেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা সলিটর জেনারেল তুষার মেহতা কে প্রশ্ন করেন – ‘ সাত বছর ধরে মামলা চলছে, তাহলে এতদিন অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার কেন করা হয়নি।হঠাৎ চার্জশিট দাখিলের দিন কেন তাদের কে গ্রেপ্তার করা হলো? ‘ দুই বিচারপতির এহেন প্রশ্নবাণে কার্যত চুপ ছিলেন সলিটর জেনারেল। ধৃতদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন সওয়াল-জবাবে – ‘ বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি না নিয়ে অন্যায় ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪০৭ ধারা প্রয়োগ করে জামিন পাওয়া ব্যক্তিদের জামিনে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে । অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা হয়নি। তাছাড়া গ্রেপ্তারের আগে কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি’৷ এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সিবিআইয়ের কাছে এই মামলা অন্য রাজ্যে সরানোর পিটিশনের স্ট্যাটাস জানতে চায়।সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন – ‘ এই মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছে’। পাশাপাশি ১৭ মে এর সিবিআই দপ্তরে মুখ্যমন্ত্রীর বিক্ষোভ প্রদর্শন বিষয়ে জানানো হয়।সেদিন  মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দপ্তরে ‘আমাকে গ্রেপ্তার করুন’ বলাটা আইনগত ভাবে বৈধ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে সিবিআই। এদিন সিবিআই কে হাইকোর্ট পরিস্কারভাবে জানিয়ে দেয় – ‘গত শুক্রবার বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ নয়।তাই বৃহত্তর বেঞ্চে এটি কে চ্যালেঞ্জ জানানো যায়না।’ মঙ্গলবার ব্যক্তিগত কারণে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্ডাল থাকছেন না। তাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী বুধবার। তবে ওইদিন আসন্ন ইয়াস ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার কথা কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তাই বুধবার নিশ্চিত শুনানি নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *