জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জি
এতদিন ওদের উদরপূর্তির মূল উৎস ছিল নিকটবর্তী বিদ্যালয়ের মধ্যাহ্নকালীন খাবার বা অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রের খাবার। লাঠি-ঝাঁটা খেয়ে মাঝে মাঝে গৃহস্থ বাড়ির খাবারও জুটত। ওদের পরিচয় ওরা পথের কুকুর। কিন্তু মার্চের শেষের দিকে লকডাউন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ওদের খাদ্য উৎসগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ওরা চরম সমস্যায় পড়ে। সর্বদা খাবার জুটত না। খাদ্যের অভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনেকেই মারাও যায়।
কিন্তু নিজের এলাকার এই অসহায় কুকুরগুলিকে দেখে বড্ড মায়া হয় এয়ারপোর্ট থানার অন্তর্গত শরৎ কলোনির বাসিন্দা অর্পিতা ইন্দ্রের। পেশায় অঙ্গনওয়ারি কর্মী অর্পিতা মাত্র পাঁচ বছর বয়সে পিতৃহীনা হলে মা জয়তী দেবী গৃহশিক্ষকতা, সেলাই এর কাজ ইত্যাদি করে মেয়েকে বড় করেন। ফলে ছোট থেকেই তার মধ্যে মায়ার সৃষ্টি হয়। তাই রাস্তার পাঁচ-ছয়টি কুকুরকে দেখে তার কষ্ট হয় এবং মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দু’বেলা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রসঙ্গত অর্পিতা দেবী একজন সুপরিচিত বাচিক শিল্পী এবং নিজের সংসারে অভাব থাকলেও বিনা খরচে এলাকার বাচ্চাদের বিনা বেতনে শিক্ষা দেন।
স্হানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে প্রত্যেকদিন দুপুর ও রাতে নির্দিষ্ট সময়ে কুকুরগুলি অর্পিতাদের বাড়ির দরজার সামনে হাজির হয়। তারপর তিনি কুকুরগুলিকে খাবার দেন এবং পরে মা-মেয়ে খাবার খান।
অর্পিতা দেবী বললেন – কুকুরগুলিকে দেখে কষ্ট হয়। তাই এগিয়ে এসেছি। তবে মা-মেয়ের অভাবের সংসারে কতদিন খাবার দিতে পারব জানিনা। সহৃদয় ব্যক্তিরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে হয়তো এইসব অবলা পশুগুলি দু’বেলা খেতে পাবে।
মেয়ের কর্মকাণ্ডে মা জয়তী দেবী খুব খুশি। তিনি বললেন – যদি দিন পারব এই কাজে মেয়েকে সাহায্য করে যাব।