পুলিশের হাতে চুড়ি পড়িয়ে দেওয়ার হুমকি , তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত মামলা মঙ্গলকোট পুলিশের
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
চলতি সপ্তাহে এক ‘অগ্নিদগ্ধ’ ফ্লেক্স ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য পড়েছিল উত্তর- পূর্ব মঙ্গলকোটের কুরম্বা গ্রামে। সেই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে রাজ্য সড়কপথ অবরুদ্ধ করে পুলিশ কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তা উঠে আসে।জনসম্মুখে পুলিশ কে সম্মানহানি করায় গত বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত মামলা রুজু করলো। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মাসাদুর রহমান ওরফে মুকুল ক্ষীরগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি পদে রয়েছেন। পুলিশের তরফে অবৈধ জমায়েত, সরকারি নির্দেশ অমান্য করা,হুমকি, প্ররোচনা দেওয়া এবং রাজ্য সড়কপথ অবরুদ্ধ করে রাখা ধারা গুলি দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ১৮৯, ২২৩(এ),৩৫২,৩৫১,১৮ নং ধারা গুলি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলকোট থানা সুত্রে জানা গেছে, ‘নোটিশ দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি অভিযুক্ত ব্যক্তি কে জনসম্মুখে পুলিশ কে হুমকি দেওয়ার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হবে’। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে গত ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে যেভাবে শতাধিক কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ফ্লেক্স নিয়ে অগ্নিসংযোগ তদন্তে নিস্ক্রিয়তার দাবি তুলে পুলিশ কে হাতে চুড়ি পড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ওই নেতা।তাতে রাজ্যজুড়ে পুলিশের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অনেকেই।বিশেষত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যাতে এই বিষয়ে অক্সিজেন না পাই, সেই বিষয়ে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হলো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।জানা গেছে, মঙ্গলকোটে জেলা সভাধিপতি শ্যামা প্রসন্ন লোহার বনাম স্থানীয় বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর রাজনৈতিক লড়াই তুঙ্গে। আগামী ১ জানুয়ারি দলীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন ঘিরে দুই শিবিরের একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে। যে লড়াই দেখা গিয়েছিল গত বিজয়া সম্মিলনির ভোজবাড়ি আয়োজনে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলকোটের ভাটপাড়া,বেবুচি, কল্যাণপুর গ্রামে শাসক দলের আভ্যন্তরীণ বিবাদে আহত হয়েছেন কয়েকজন।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে গত বুধবার ভোররাতে কুরম্বা গ্রামে কে বা কারা এক ফ্লেক্সে আগুন লাগিয়ে দেয়? এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষীরগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মাসাদুর রহমান ওরফে মুকুল শতাধিক কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কৈচর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন কর্মসূচি নেন।অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশ কে দ্রুত ব্যবস্থা এমনকি ১ ঘন্টার মধ্যেই নিতে আহবান করেন। যদি গ্রেপ্তারে সমর্থ না হয়, তখন পুলিশ কে চুড়ি পড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। যদিও পরবর্তীতে স্থানীয় বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী আইনের প্রতি আস্থা রেখে বিক্ষোভ তুলে নেন।।মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ জানিয়েছেন -” হুমকি দেওয়া ঘটনায় পুলিশের তরফে স্বতঃস্ফূর্ত মামলা রুজু করা হয়েছে “৷ জানা গেছে, টানা এক বছর ধরে যেভাবে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ অপরাধ দমনে ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে।তাতে এলাকাবাসীদের বড় অংশ খুশি।ঠিক এমতাবস্থায় রাজনৈতিক রেষারেষির কারণে স্থানীয় থানার পুলিশ কে ‘অহেতুক’ হুমকি দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।