প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই নভেম্বর মাস

Spread the love

প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই নভেম্বর মাস

• প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং সময়মতো চিকিৎসাই এই মারণ রোগগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র

কলকাতা, নভেম্বর ২০২৪: প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সার সচেতনতা মাস হিসেবে নভেম্বর মাস পালিত হয়। এই সময়ে এই দুই মারাত্মক ক্যান্সারের উপর আলোকপাত করা এবং প্রাথমিক সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ ও সময়মতো চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। বিশ্বব্যাপী এই ক্যান্সারের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণের সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সারকে প্রায়ই “নীরব ঘাতক” বলা হয় কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে এর লক্ষণগুলি খুব সূক্ষ্ম হওয়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেরিতে সনাক্ত করা হয়। একইভাবে, পেটের ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণ হজমজনিত সমস্যার মতো মনে হয়, ফলে চিকিৎসার দেরি হয়। সময়মতো সনাক্ত এবং চিকিৎসা না হলে উভয় ক্যান্সারই প্রাণঘাতী হতে পারে।

এই সচেতনতা মাসের উদ্দেশ্য হল জনসাধারণকে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি, লক্ষণ এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানো। বিশেষ করে যারা জিনগত প্রভাব বা জীবনযাত্রার কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাদের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং অত্যন্ত জরুরি।

নারায়ণা হাসপাতাল, আরএন টেগোর হাসপাতাল, মুকুন্দপুর-এর মেডিক্যাল অনকোলজি ও হেমাট অনকোলজির ডিরেক্টর ডাঃ বিবেক আগরওয়াল বলেন, “প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে অস্পষ্ট এবং সাধারণ লক্ষণ দেখায়, ফলে এগুলি দেরিতে ধরা পড়ে। পেটের অবিরাম অস্বস্তি, অজানা ওজন হ্রাস এবং হজমের সমস্যার মতো লক্ষণগুলি অবহেলা করা উচিত নয়। তামাক এবং মদ্যপান কমানো এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এই ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। সচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

নারায়ণা হাসপাতাল, হাওড়ার সার্জিকাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ পঙ্কজ কুমার সোনার বলেন, “ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তি এবং চিকিৎসার পদ্ধতিতে উন্নতির ফলে প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত হলে রোগীর ফলাফল অনেক ভালো হয়। কিন্তু বেশিরভাগ রোগী আমাদের কাছে আসেন তখনই যখন ক্যান্সার অনেকটাই এগিয়ে গেছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে এই ক্যান্সারগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা সম্ভব। এই মাসটি যেন আমাদের সকলকে নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগী হতে এবং স্থায়ী সমস্যার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে উৎসাহিত করে।”

প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে এমন কিছু কারণ হল:

  • তামাক ও অতিরিক্ত মদ্যপান
  • স্থূলতা এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস
  • পেটের ক্যান্সারের জন্য হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ
  • দীর্ঘস্থায়ী প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস

প্যানক্রিয়াটিক এবং পেটের ক্যান্সার সচেতনতা মাস পালন করতে গিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং সময়মতো চিকিৎসা এই নীরব কিন্তু মারাত্মক রোগগুলির বিরুদ্ধে আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। সতর্ক জীবনযাত্রা গ্রহণ, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা উৎসাহিত করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা অসংখ্য জীবন বাঁচাতে পারি এবং তাদের সুস্থ ভবিষ্যৎ দিতে পারি।

এই নভেম্বর মাসে আসুন, আমরা এই বার্তা ছড়িয়ে দিই, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াই এবং একটি সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *