প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি

Spread the love

প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি

নিজস্ব প্রতিনিধি, 

ভারতের প্রাক্-স্বাধীনতা কালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তার গৌরবময় ঐতিহ্য ধরে রেখে উত্তরোত্তর বিকাশ সাধনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি। নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ রথীন্দ্রমঞ্চে বুধবার এক বর্ণাঢ্য মহতী আয়োজনের মধ্য দিয়ে সোসাইটি পালন করল তাদের ৭৯ তম প্রতিষ্ঠাদিবস। আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শ্রীমতী অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের কো-চেয়ারপার্সন শ্রীমতী মানসী রায়চৌধুরী, প্রথিতযশা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শ্রীমতী বিভা সেনগুপ্ত এবং বিশিষ্ট সঙ্গীত প্রশিক্ষক, নির্দেশক ও শিল্পী শ্রী রামানুজ দাশগুপ্ত মহাশয়। সোসাইটির তরফে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কার্যকরী সভাপতি ড. সুজিত কুমার বসু, সহ সভাপতিদ্বয় অনিন্দ্য কুমার মিত্র, বিচারপতি শ্রী সৌমিত্র পাল এবং সাধারণ সম্পাদক শ্রী সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সোসাইটির সূচনা ও সুদীর্ঘ পথ চলার উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রদর্শিত হয়। সোসাইটির সদস্য ও বিশিষ্ট তথ্যচিত্র নির্মাতা মুজিবর রহমান বহু শ্রমে এটি নির্মাণ করেছেন। এরপর প্রতিষ্ঠাদিবস স্মরণে মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন সহ কবিগুরু ও সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন মঞ্চে উপবিষ্ট আমন্ত্রিত ব্যক্তিত্ববর্গ।  বিশিষ্ট অতিথিদের পুষ্পস্তবক স্মারক ইত্যাদি দিয়ে বরণ করে নেন ড.সুজিত কুমার বসু, বিচারপতি সৌমিত্র পাল ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। প্রারম্ভিক ভাষণে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক তুলে ধরেন সোসাইটির গৌরবময় যাত্রাপথের ইতিকথা, শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করেন সেই সমস্ত দিকপাল পুরুষদের যাঁরা সোসাইটি প্রতিষ্ঠাকল্পে একযোগে এগিয়ে এসেছিলেন। বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় সোসাইটির ঐতিহ্য, আদর্শ, লক্ষ্য, দূরদর্শিতা এই বিষয়গুলি উল্লেখ করে বর্তমান বিপুল কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বক্তৃতা দেন শ্রীমতী মানসী রায়চৌধুরী ও সোসাইটির সহ সভাপতি বিচারপতি সৌমিত্র পাল।এই সন্ধ্যায় প্রবীণা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শ্রীমতী বিভা সেনগুপ্ত ও রামানুজ দাশগুপ্ত মহাশয়কে তাঁদের দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ সম্বর্ধনা দেওয়া হয় সোসাইটির তরফ থেকে। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ মানপত্র সহ উপহার সামগ্রী হাতে তুলে দেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। সোসাইটির প্রতি অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে শিল্পীদ্বয় কয়েকটি গান পরিবেশন করেন। কলকাতা ইয়ুথ এনসেম্বল প্রতিষ্ঠানের তরফে কর্ণধার অমিতাভ ঘোষের পরিচালনায় যন্ত্রসঙ্গীতে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়ে শোনানো হয়। বেহালা, গীটার ও নানা বাদ্যযন্ত্র সমন্বয়ে সুর যন্ত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রগান পরিবেশনা এক অপূর্ব মাত্রা যোগ করে। সোসাইটির শিল্পী সদস্যদের পরিবেশনায় নিবেদিত হয় একটি আলেখ্য – “আনন্দগান বাজে”। ভাষ্য, কবিতা ও রবীন্দ্রগীতি সহকারে আলেখ্যটি পরিবেশিত হয় দ্বৈত ও সমবেতভাবে। আলেখ্য সংকলনে সুমিত অধিকারী, ভাষ্য ও পাঠে সুমিত অধিকারী ও সোনালী গুপ্ত, সঙ্গীত পরিচালনায় শিপ্রা বসু, সামগ্রিক নির্দেশনায় শিপ্রা বসু ও সুমিত অধিকারী। সুপ্রযুক্ত ভাষ্য কবিতা ও সঙ্গীত সমন্বয়ে পরিবেশনাটি হয়ে ওঠে যথার্থ সুন্দর শ্রুতিমধুর। সমগ্র অনুষ্ঠান পর্ব সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন সদস্যা শ্রীমতী বুলা বাগচী। শেষলগ্নে সমবেত কণ্ঠে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে প্রতিষ্ঠাদিবসের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *