প্রয়াত স্ত্রীর স্মৃতিতে আয়োজিত হতে চলেছে রক্তদান শিবির

Spread the love

প্রয়াত স্ত্রীর স্মৃতিতে আয়োজিত হতে চলেছে রক্তদান শিবির

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, হরিপাল, হুগলী -:

 সেই ভয়ংকর কালোদিনটার কথা আজও ভুলতে পারেননা হুগলীর হরিপালের অন্বয় দে ও শিশুকন্যা রাই (স্পন্দিতা)। সেদিন ছিল ২০২১ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারি। চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে স্বামী অন্বয় ও অষ্টম বর্ষীয়া শিশুকন্যা রাইকে ফেলে না-ফেরার দেশে চলে যান স্বর্ণালী দে। মা'কে হারিয়ে বাচ্চা মেয়েটার দিশেহারা হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়ার দিন সবাইকে চমকে দিয়ে বাচ্চা মেয়েটা মায়ের স্মৃতিতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার জন্য সমাজসেবী বাবার কাছে আব্দার করে। বাবা অন্বয় মেয়ের সেই আব্দার ফেলতে পারেননি। সদ্য স্ত্রীকে হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে রেখে মেয়ের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন।

  সেই শুরু। প্রয়াতা স্ত্রীর স্মৃতিতে স্ত্রীর মৃত্যু বার্ষিকীর দিন পরপর তিন বছর রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু  অনিবার্য কারণবশতঃ ২০২৪ সালে শিবির বন্ধ থাকলেও এবছর ২৩ শে ফেব্রুয়ারি আবার রক্তদান শিবির হতে চলেছে। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার জন্য কেবল তারিখের পরিবর্তন হয়েছে। 

   জানা যাচ্ছে এসএসকেএম হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার সহযোগিতায় অন্বয় বাবুর নিজস্ব বাড়িতে এই রক্তদান শিবির আয়োজিত হবে। পাশাপাশি ওইদিন রাজবলহাট কালচারাল সেণ্টারের উদ্যোগে একটি 'মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার শিবির' অনুষ্ঠিত হবে।

   দু'টি শিবিরকে সফল করার জন্য ছোট্ট রাই এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে আকুল আবেদন করে। তার বক্তব্য, আমার মা আর কোনোদিনই ফিরে আসবেননা। কিন্তু এই রক্তদান শিবির থেকে সংগৃহীত রক্ত অন্যকে আমার মত মা-হারা করবেনা। 'মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার' এর ফলে একজন দৃষ্টিহীন মানুষ হয়তো পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে।  

 অন্বয় বাবুর এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে নিয়মিত রক্তদান শিবিরের আয়োজক    গুসকরার সৌগত গুপ্ত বললেন, খুবই ভাল উদ্যোগ। তিনি স্বেচ্ছায় রক্তদান করে বাচ্চা মেয়েটার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এলাকাবাসীর কাছে আবেদন করেন। এমনকি সুযোগ পেলে নিজে শিবিরে উপস্থিত থাকার ব্যাপারে ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *