প্রস্তুতি চলছে ধান সংরক্ষণের

Spread the love

প্রস্তুতি চলছে ধান সংরক্ষণের

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

'গোলা ভরা ধান দেব' - জমি থেকে ধান উঠলেই সেগুলো গোলায় ভরতে হবে। অথচ কিছুদিন আগেও ক্ষেত জমিগুলোতে বিরাজ করত মরুভূমির শূন্যতা। ধীরে ধীরে জমিগুলো সবুজে ভরে যায়। সৃষ্টি সুখে মন আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে কৃষকদের। ক্ষেত জমির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শহরের আধুনিকারা নিজস্বী তুলে নেয়। বিবর্তনের নিয়ম মেনে সেগুলোর রঙ পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। এখন যেদিকেই তাকানো হয় মনে হবে ক্ষেত জমিগুলোতে যেন সোনা ঝরে পড়ছে। 

যেহেতু ধান পচনশীল নয় তাই হিমঘরের পরিবর্তে সেগুলো বাড়িতে মড়াই বা গোলাতে সংরক্ষণ করা হয়। গোলাগুলোর দেওয়াল ইঁট-সিমেণ্ট দিয়ে তৈরি। সেগুলো একটু পরিস্কার করে নিলেই হয়।

অন্যদিকে মড়াইয়ের দেওয়াল তৈরি হয় খড় ও খড় দিয়ে তৈরি ‘বর’ দিয়ে। ধান বিক্রি বা ব্যবহার করার জন্য একবার মড়াই খোলা হলে সেই খড় ও ‘বর’ দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা যায়না।

ওদিকে কয়েকদিন পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উঠতে চলেছে সোনারূপী আমন ধান। সেগুলো সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ব্যস্ততা। 

মঙ্গলকোটের জালপাড়ায় লক্ষী পুজোর পরদিন অলস বিকেলে চোখে পড়ল 'বর' তৈরি করতে স্থানীয় কৃষক ভবেশ মাঝি ও হাবল মাঝির ব্যস্ততা। মূল কারিগর ভবেশ এবং তাকে সাহায্য করছে হাবল। ভিজে খড় যোগান দিচ্ছে প্রশান্ত। অন্যদিকে পাশে দাঁড়িয়ে অবাক বিস্ময়ে সেগুলো তৈরি করা দেখছে বাবুল, সুখেশ্বর প্রমুখরা। 

 জানা যাচ্ছে 'বর'-এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০ হাত অর্থাৎ ১২০ ফুটের মত হয়। মোটামুটি ওরা তিনটি 'বর' তৈরি করে এবং প্রতিটির জন্য ২৫০ টাকা পায়। 

ভবেশ বাবু বললেন - আমরা ক্ষেত মজুর। এই সময় মাঠে খুব একটা কাজ থাকেনা। তাই বিকেলের দিকে সময় নষ্ট না করে 'বর' তৈরি করি। তিনটি 'বর' তৈরি করতে ঘণ্টা চার-পাঁচ লাগে। কিছু আয় তো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *