বর্ধমানে পালিত হলো ‘নমামী গঙ্গা’ জেলা সম্মেলন

Spread the love

বর্ধমানে পালিত হলো ‘নমামী গঙ্গা’ জেলা সম্মেলন

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

 ভারতের দীর্ঘতম নদী 'দেবী সুরেশ্বরী' গঙ্গা আজ দূষণের কবলে পড়ে তার অতীত মর্যাদা হারিয়ে ফেলেছে। এখনো চরম বিশ্বাসে ভর করে বহু মানুষ গঙ্গার জল পান করে এবং নিজেদের বিপদ ডেকে আনছে। গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করার জন্য বর্তমান কেন্দ্র সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এরই অন্যতম অঙ্গ হলো 'নমামী গঙ্গা' প্রকল্প। 

   কিন্তু বিভিন্ন কারণে এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্প প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষ তথা দূষণ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন  সংস্হাকে সচেতন করার লক্ষ্যে এই জেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গঙ্গা সহ দামোদর, খোরে, বাঁকা, অজয় ও অন্যান্য নদীর দূষণ রোধ করে নদীর অবিরল ধারা যাতে বজায় থাকে তার জন্য উপস্থিত সকলকে সচেতন করাই ছিল সম্মেলনের মুখ্য উদ্দেশ্য। উপস্থিত প্রতিনিধিরা গঙ্গা দূষণ রোধ করার জন্য জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ ও নগর পালিকার আরও  সক্রিয় ভূমিকা থাকা দরকার বলে মনে করেন।

   এই ভূমিকা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্ধমানের নেহেরু যুব কেন্দ্র গত ২ রা ডিসেম্বর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অডিটোরিয়ামে 'নমামী গঙ্গা পরিয়োজনা  অন্তর্গত জেলা সম্মেলন ২০২২' এর  আয়োজন করে। জেলা স্তরীয় এই  কার্যক্রমে বর্ধমান জেলার গঙ্গা পার্শ্ববর্তী ৬ টি ব্লকের দুই শতাধিক যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করে। প্রসঙ্গত প্রতিষ্ঠা লাভ করার প্রায় শুরু থেকেই নেহেরু যুব কেন্দ্রের বর্ধমান শাখা তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে। এক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়।

  প্রদীপ জ্বালিয়ে ও স্বামী বিবেকানন্দের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বর্ধমান ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার নিশা গোস্বামী (আই এফ এস)। তাকে সহযোগিতা করেন নেহেরু যুব কেন্দ্রের বর্ধমান শাখার জেলা যুব আধিকারিক উত্তরা বিশ্বাস। 

   অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নেহেরু যুব কেন্দ্রের কলকাতা  সংগঠনের স্টেট ডিরেক্টর রাজীব মজুমদার সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। রিসোর্স পার্সনরূপে     

উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সনৎ কুমার গুছাইত এবং বাঁকুড়া রমাই পন্ডিত মহাবিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. অভিষেক সাহা এবং কনক চন্দ্র ঘোষ সহ অনেক সাধনসেবী।

  নেহেরু যুব কেন্দ্রের এই মহতী প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে জেলা সম্মেলনে উপস্থিত যুবক যুবতীদের উদ্দেশ্যে নিশা দেবী বলেন- আমাদের দেশের দীর্ঘতম নদী গঙ্গাকে আমরা মাতৃরূপে বন্দনা করি। গঙ্গা নদী বিভিন্ন ভাবে আমাদের উপকার করে চলেছে। অথচ আমাদের অজ্ঞতার জন্য সেই গঙ্গা মা আজ দূষিত। ধীরে ধীরে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য তিনি যুব সমাজকে আহ্বান করেন। 

 সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে সকল সাধন সেবীকে নদী দূষণ রোধ করার বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করেন।  একইসঙ্গে উপস্থিত যুব সদস্যদের দূষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পরিবেশন করা হয়। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ডি.পি.ও    প্রীতম মুখার্জী। সমবেত রাষ্ট্রীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে জেলা সম্মেলনের সমাপ্তি হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নেহেরু যুব কেন্দ্রের বর্ধমান শাখার এপিএ সুজন ঠাকুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *