বাঁকুড়ার কৃতি সন্তান ডক্টর অশোক কুমার পাত্র
। সাধন মন্ডল, বাঁকুড়া:————–বাঁকুড়ার মুকুটে আরো একজন কৃতি সন্তান উপাচার্য হলেন বাঁকুড়ার তালডাংরা বিধানসভার ইন্দপুর ব্লকের আড়ালডিহি গ্রামের এক কৃষক পরিবারে যার জন্ম তিনি হলেন ডক্টর অশোক কুমার পাত্র। পিতা মদনমোহন পাত্র মাতা গৌরী দেবী। মদন মোহন বাবু ও গৌরী দেবীর কোল আলো করে যে শিশু জন্ম নিয়েছিলেন আজ তিনি কল্যাণীর বিধানচন্দ্র কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। প্রত্যন্ত এলাকারএই কৃতি সন্তান ড:অশোক কুমার পাত্র, যিনি মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক পুরষ্কারে পুরস্কৃত।ভোপালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সয়েল সায়েন্স (মৃত্তিকা বিজ্ঞান) এর প্রাক্তন পরিচালক ও বর্তমানে পশ্চিম বঙ্গের বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য, আড়ালডিহি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আড়ালডিহি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর উত্তরায়ন দুবরাজপুর উচ্চমাধ্যমিক স্কুল থেকে এগ্রিকালচার নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন । এরপর দিল্লির (IARI) ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে মাস্টার্স এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পি এইচ ডি করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে কাজ করেন। কাজের সূত্রে একাধিকবার বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ড: অশোক কুমার পাত্র বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী হিসাবে মাটির জৈব কার্বন, মাটির নাইট্রোজেন, মাটির বাস্তুশাস্ত্র, জৈব বৈচিত্র ও মাটিতে ন্যানো সারের প্রয়োগ নিয়ে তার অসামান্য কৃতিত্ব রেখেছেন তার গবেষণায়। মৃত্তিকা গবেষণা নিয়ে তিনি প্রায় কুড়িটি বই সম্পাদনা করেছেন। বিভিন্ন জার্নালে তাঁর গবেষণা স্থান পেয়েছে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক পুরষ্কার অর্জন করেছেন বাঁকুড়ার এই কৃতি সন্তান ও বর্তমান বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড:অশোক কুমার পাত্র। যিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম। ২০২২ সালের ইউ এন এফ ও গ্লিঙ্কা ওয়ার্ল্ড সয়েল পুরষ্কার, ২০২১ সালে ICAR এর রফি আহমেদ কিদওয়াই পুরস্কার, ,IPNIF AWARD, IARI এর হুকার পুরষ্কার, প্লাটিনাম ISSS এর জুবলি স্মৃতি পুরষ্কার সহ একাধিক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন ড:অশোক কুমার পাত্র। তাঁর গবেষণা কালে তিনি মোট ২৬০ টি গবেষণা জার্নাল প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়। ২০১৭ সালে মৃত্তিকা বিজ্ঞানী হিসাবে বিশ্বে শ্রেষ্ঠ ১৩ জন বিজ্ঞানীর মধ্যে অন্যতম একজন বিজ্ঞানীর শিরোপা অর্জন করেন বাঁকুড়ার এই কৃতি সন্তান। সম্প্রতি তিনি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে যোগদান করেছেন সেই খবর শুনে তার জন্মভূমি আড়ালডিহি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন আবেগে আপ্লুত তারা তাদের এই কৃতি সন্তানকে সম্বর্ধনা দিতে চান। তার এই সাফল্যে খুশি তার পরিবারসহ আত্মীয় পরিজন। তার নিকট আত্মীয় সারেঙ্গার চিলতোড় গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত মিশ্র বলেন আমরা অত্যন্ত আনন্দিত তার এই পদে আসীন হওয়ায়। তিনি পশ্চিমবাংলায় কৃষি বিপ্লব ঘটাবেন বলে তাদের আশা। আমাদের দেশে পড়াশোনা করে অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন এবং পাকাপাকিভাবে তারা বিদেশেই থেকে যাচ্ছেন। সেখানে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ডঃ অশোক কুমার পাত্র। তিনি তার মাতৃভূমিকে ভুলেন নি। পশ্চিমবঙ্গের নামকরা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে আসীন হয়ে বাংলায় তার শিক্ষা ও গবেষণার প্রয়োগ ঘটিয়ে কৃষি বিপ্লব ঘটাবেন।