সাধন মন্ডল,
ছাব্বিশতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন বাঁকুড়া উন্নয়নী ইনস্টিটিউট এ ১৯৯৮ সালের আজকের দিনে পথ চলা শুরু করেছিল জেলার একমাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বাঁকুড়া উন্নয়ন ইন্সটিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, সংক্ষেপে BUIE, এর উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। উদ্বোধনের দিন অশ্বিনী পতি বাবুকে পাশে বসিয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু।যদিও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই তিনটি বিভাগে নির্ধারিত সময়েই শুরু হয়ে গিয়েছিল পঠনপাঠন। এখন এই কলেজে প্রায় সব বিভাগ নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ আছে। এই কলেজের মালিকানা কোনও ব্যক্তি বিশেষের নয়।দরিদ্র,মেধাবী ছাত্ররা অর্থাভাবে যেন পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্য ছিল প্রথম থেকেই। জেলার বিশিষ্ট সমাজকর্মী,প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক পার্থ দে ছিলেন এই কলেজের প্রথম সভাপতি ।
কলেজ শুরুর জন্য বিল্ডিং সহ জমি দিয়েছিলেন, জেলার শিক্ষাক্ষেত্রে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য, সেই সর্বজন শ্রদ্ধেয় অশ্বিনী পতি মহাশয়। শহরের উপকণ্ঠে পোয়াবাগানে সেই সময় নবনির্মিত বিবেকানন্দ মিশন বিদ্যাপীঠের স্কুল বিল্ডিং ও তৎসংলগ্ন জমি তিনি নিঃশর্তে দান করেছিলেন। জেলার রিক্সাচালক থেকে শুরু করে অগণিত সাধারণ মানুষ
‘দান-মেলা’য় এই কলেজ তৈরি করার জন্য সাহায্য করেছিলেন ।
সেই সময় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য রাজ্যের ছেলেমেয়েরা যখন দলেদলে বাংলার বাইরে পাড়ি দিচ্ছিল তখন কিছুটা হলেও তাদের সুবিধা হয়। অতীতেও জেলায় এভাবেই বাঁকুড়া সম্মিলনী নামের সংস্থাটি ১৯২৪ এ বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেছিল। যা আজ ইতিহাস। জেলায় বাঁকুড়া জিলা স্কুল ছাড়া আর যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুনামের সঙ্গে আজও টিকে আছে সেসবই বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত। সরকার যেন এক্ষেত্রে বড়োই কৃপণ! কিন্তু জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা নিরন্তর তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠার দিনটিকে স্মরণে রেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ, ফ্যাকাল্টি মেম্বার, ছাত্র-ছাত্রী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে আয়োজন করেছিলেন নানান অনুষ্ঠানের।ক্যাম্পাস জুড়ে আদিবাসীদের নৃত্য, ধামসামাদলের মূর্ছনায় মেতে ওঠেন সকলে। কলেজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচনা হয় মূল অনুষ্ঠানের। পতাকা উত্তোলন করেন কলেজ পরিচালন সমিতির বর্তমান সভাপতি শশাঙ্ক দত্ত মহাশয়। ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রক্তদান করেন। তারা একটি বিতর্ক সভার আয়োজন করেছিলেন বিষয় Ragging বিরোধী মানসিকতা তৈরি করার উপযোগী।
কলেজের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেমিনার কক্ষে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অন্যান্য অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। এদিন উপস্থিত ছিলেন বহু বিশিষ্ট মানুষ। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ গৌতমবুদ্ধ সুরাল , ছাত্র ছাত্রীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে বলেন, গর্বের BUIE এগিয়ে চলুক মানুষের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায়। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক ভজন দত্ত, লোককবি কৃষ্ণ দুলাল চট্টোপাধ্যায় সহ জেলার বিশিষ্ট মানুষজন।