অনুষ্ঠান
বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষ্যে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের নিবেদন ‘ভুবনজোড়া আসনখানি’, সপ্তাহব্যপী অনলাইনের অনুষ্ঠান শেষ হলো চোদ্দই আগস্ট |

বাইশে শ্রাবণ শুধু মহাপ্রয়াণ নয়, পরমাত্মার সঙ্গে মহামানবের মিলনোৎসবের দিনও বটে। আশি বছর চলল। আমাদের প্রাণের ঠাকুর, রবিঠাকুর ইহজগৎ ত্যাগ করলেও মানুষের মনের সংসারের পরতে পরতে তিনিও আজও আছেন এবং থাকবেনও চিরকাল। তাই শুধু মাত্র একটি-দু’টি দিন নয়, জীবনের প্রত্যেকটি দিনই নিজেদের কাজেকর্মের মধ্যে দিয়ে তিনি চিরস্মরণীয়। কিন্তু তবু মন মানে না। ঠাকুরের পায়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের কিছু বিশেষ দিনের অবকাশ খুঁজে ফেরা মন তাই ফিরে ফিরে স্মরণ করে বাইশে শ্রাবণ। এই বছরে বাইশে শ্রাবণে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের নিবেদন ‘ভুবনজোড়া আসনখানি’।
বিশ্ব জুড়ে করোনার অতিমারির মধ্যেও সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে এই বিশেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের প্রয়াস বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের। তাদের ভাবনায় অঙ্গীকারে বাইশে শ্রাবণ হয়ে উঠলো তাঁর মহাজীবনের উদযাপন, নব প্রজন্মের সঙ্গে তাঁর সেতুবন্ধনের দিন ও তাঁর প্রাণের বাংলাকে বাঁচানোর দিন। প্রাণের ঠাকুরের আশ্রয় এসে এ হয়তো এক অর্থে শান্তি-সন্ধানের প্রয়াসও।
প্রসঙ্গত পঁচিশে বৈশাখ থেকে শুরু করে এক সপ্তাহ চলেছিল বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী’। দুই বাংলার বাঙালিদের প্রযুক্তির সুতোয় বেঁধে হয়েছিল সেই উদযাপন।

এ বার বাইশে শ্রাবণে আরও ব্যাপ্ত সেই পরিধি। অনুষ্ঠানের সূচনা হবে নিমতলা মহাশ্মশানে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা অর্পণের মাধ্যমে। তার পর সেখান থেকে জোড়াসাঁকো হয়ে রবীন্দ্রভারতী এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।গুয়াহাটি, শিলচর, ত্রিপুরা, বাংলাদেশ, রাঁচি হয়ে শেষ হয়েছিল
জামশেদপুর এ |
অনুষ্ঠানে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা। পাশাপাশি অসমের গুয়াহাটি, ত্রিপুরা, শিলচর, জামশেদপুর, রাঁচি ও অন্যান্য অঞ্চলের রবীন্দ্র অনুরাগী এবং শিল্পীরাও এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের শিল্পীরা, অতলান্তিকের ও-পার থেকে কানাডা, ব্রিটেন ও আমেরিকার শিল্পীরাও ।
সমগ্র অনুষ্ঠানটির একটি বড়ো অংশই সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। সপ্তাহব্যাপী এই অনুষ্ঠান চলেছে প্রতি দিন ভারতীয় সময় সন্ধ্যা সাতটায়। সাত তারিখে সরাসরি দেখানো হবে সকালে দশটা থেকে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন মধুমিতা বসু। পরিচালনায় জয়িতা বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের শিল্পী ও অতিথিবৃন্দ সুমিত্রা সেন, শ্রাবণী সেন, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, নৃত্যশিল্পী পলি গুহ, কবি হাসমত জালাল, কবি পঙ্কজ সাহা ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাহিত্যিক ডক্টর সুখেন বিশ্বাস,
ত্রিপুরা থেকে তিথি দেব বর্মন। এ ছাড়াও ইন্দ্রানী সেন, মোহন সিং খানগুরা, দূর্বা সিং খানগুরা, মধুমিতা বসু,চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, প্রদীপ দত্ত, দীপাবলি দত্ত, ডাঃ তানিয়া দাস, শুভময় সেন, পৌষালী রুদ্র বসু, বিশ্বজিৎ দাস গুপ্ত, জামশেদপুর থেকে চন্দনা চৌধুরী, রাঁচির সুবীর লাহিড়ী ছিলেন|
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা হলেন বিশিষ্ট শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ, ফাহিম হোসেন চৌধুরী,শামসুল হুদা, ঝর্না রহমান, বর্ণালী সরকার, বেলায়েত হোসেন, বর্ণালী বিশ্বাস শান্তা, সালমা আকবর, সাজেদ আকবর, মীরা মণ্ডল, শিমুল রহমান, গোলাম হায়দার, মোহসেনা হোসেন ইলোরা প্রমুখ |
ও দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন সুদূর ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম থেকে মিডল্যান্ডস বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেবলীনা মজুমদার প্রারম্ভিক বক্তৃতা দেন। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন অহনা বিশ্বাস ও আত্রেয়ী ভট্টাচার্য, বেহালা বাজাবেন রিতিশা বৈদ্যরায় এবং আবৃত্তি করবেন মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়।
ফ্লোরিডা থেকে যোগ দিয়েছিলেন বিজয়া সেনগুপ্ত, কানাডা থেকে মুনিরা সুলতানা মিলি এবং আরও অনেকে। এ ছাড়াও দেশ-বিদেশের অনেক বুদ্ধিজীবীও ছিলেন।
দেখা যাচ্ছে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের ইউটিউব ও ফেসবুক পেজে।