মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু ),
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মানহানি মামলা খারিজ করলো কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার রায়দান ঘটে, যেখানে কলকাতা হাইকোর্ট আদেশনামায় জানিয়েছে – ‘সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে যে সম্মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে তার সারবত্তা নেই। পুলিশ অভিযোগের সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি’। চার্জশিট খারিজের ফলে এই মানহানি মামলাও খারিজ করলো।উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশক্রমে রেজিস্ট্রার জেনারেল এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রাক্তন/বর্তমান বিধায়ক – সাংসদদের বিচারের জন্য পৃথক বেঞ্চের ঘোষণা করেন৷ এই মুহূর্তে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় রাজ্যের একাংশ প্রাক্তন / বর্তমান বিধায়ক – সাংসদ অভিযুক্ত। দ্রুত মামলার নিস্পত্তির জন্য কলকাতা হাইকোর্টের এহেন আইনী উদ্যোগ বলে জানা যায়। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট মিডিয়েশন সহ লোক আদালতের বিচার প্রক্রিয়াকে অনলাইন শুনানি ( ভার্চুয়াল) করে বেশিরভাগ মামলার নিস্পত্তি ঘটিয়েছে বা ঘটাচ্ছে। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে যেখানে করোনা মহামারীতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত। গত ২১ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত সাংসদ বিধায়কদের ( প্রাক্তন ও বর্তমান) নিয়ে দুটি বেঞ্চ চালু করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর বেঞ্চ। এই দুটি বেঞ্চে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর আরও একটি ডিভিশন বেঞ্চ চালু হলো। সেখানে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের এহেন বেঞ্চে বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র হয়ে আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য এক পিটিশন দাখিল করেছিলেন। মূলত মানহানি মামলা খারিজের আবেদন এটি। আদালত সুত্রে প্রকাশ, গত দুবছর আগে এক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলে তৃনমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ওই বিতর্কিত মন্তব্যটি আশালীন দাবি করে আলিপুর থানায় মানহানি মামলা করেন মহুয়া। আলিপুর আদালতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। বেশ কয়েকটি হাজিরা এড়াবার জন্য বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১০ মার্চ ওয়ারেন্ট জারী হয়৷ এই ওয়ারেন্ট জারীর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন বিজেপির এই সাংসদ। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এজলাসে এই ওয়ারেন্টের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারী হয়।ঠিক এইরকম পেক্ষাপটে কলকাতা হাইকোর্ট গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারী করে প্রাক্তন ও বর্তমান সাংসদ – বিধায়কদের ফৌজদারি মামলায় দ্রুত নিস্পত্তির জন্য তিন টি আলাদা বেঞ্চ। এর মধ্যে দুটি টি ডিভিশন বেঞ্চ এবং একটি সিঙ্গেল বেঞ্চ চালু করবার নির্দেশ দেয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর একটি করে ডিভিশন এবং সিঙ্গেল বেঞ্চ চালু হয়।এরপর আরও একটি ডিভিশন বেঞ্চ চালু হয়েছে। সম্প্রতি আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় তাঁর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা খারিজের আবেদন নিয়ে পিটিশন দাখিল করেন। বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র আইনজীবী অয়ন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন – সাংসদের বিরুদ্ধে উঠা মানহানি মামলাটি আইনগত ঠিক নয়।বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার রায়দান ঘটে। যেখানে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মানহানি মামলায় সম্মানহানির অভিযোগে সারবত্তা নেই বলে জানিয়ে দেয় হাইকোর্ট। তদন্তকারী পুলিশ চার্জশিট দাখিলে অভিযোগের সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি। তাই বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে মানহানি মামলা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট।