বিধানসভার আগে ফৌজদারি মামলায় ‘সুপ্রিম’ রক্ষাকবচ বিজেপি নেতৃত্বের

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন (টিপু ),


গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে লোকসভা ভোটপর্ব অবধি বাংলার বিজেপি নেতা – সাংসদদের বিরুদ্ধে শতাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে চার্জশিট দাখিল পর্বও শুরু হয়েছে রাজ্য পুলিশের পক্ষে। নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের নাম যেমন আদালতে জমা পড়েছে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে  বিজেপির নেতা – সাংসদদের গ্রেপ্তার করতে পারে, এইরূপ আশঙ্কায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন। সেই মামলার চটজলদি অন্তবর্তী নির্দেশ না পেয়ে চলতি মাসে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব। সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিলে বিজেপির পক্ষে মামলাকারী অরবিন্দ মেনন দাবি করেছিলেন – ‘ মামলাগুলির তদন্ত প্রক্রিয়া হয় স্থগিত হোক, নতুবা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করা হোক। কেননা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এইবিধ ফৌজদারি মামলায় রাজনৈতিক আক্রোশে রাজ্য পুলিশ কে অপব্যবহার করতে পারে শাসক দল তৃণমূল ‘। উল্লেখ্য, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা বাংলার দলীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গী, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং সহ পাঁচজনের মামলার খতিয়ান তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছিল বিজেপি। শুক্রবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষন কউলের ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কে জানিয়ে দেয় – ‘ এই পাঁচজন নেতার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান অর্থাৎ গ্রেপ্তার করতে পারবেনা পুলিশ। তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে আগে নোটিশ ইস্যু করে।পরবর্তী শুনানি না হওয়া অবধি এই অন্তবর্তী নির্দেশ কার্যকর থাকবে’৷ প্রসঙ্গত, গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে এখনও অবধি এই পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে ১১৪ টি ফৌজদারি মামলা রুজু হয়েছে পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন থানায়৷ নদীয়ার তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের নাম পেশ হয়েছে নিম্ন আদালতে। লাভপুরে তিনভাই খুনের মামলায় নুতন ভাবে পুলিশের তদন্তে নাম এসেছে মুকুল বাবুর। আবার যুব মোর্চার ‘নবান্ন’ অভিযান সহ উত্তরকন্যা অভিযান কর্মসূচিতে বেশকিছু ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বিজেপির নেতারা। ইতিমধ্যেই ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর বিরুদ্ধে ৬৪ টি, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে ৪৯ টি মামলা চলছে বাংলার বিভিন্ন থানায়।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে রাজ্য পুলিশের অতি সক্রিয়তার আশংকা করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলস্বরূপ আইনী রক্ষাকবচ নিতে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট পরবর্তীতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় বিজেপি।শুক্রবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষন কউলের ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কে জানিয়ে দেয় – ‘এই পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে চলা ফৌজদারি মামলা গুলিতে রাজ্য পুলিশ কোন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবেনা। তবে তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ। পরবর্তী শুনানি না হওয়া অবধি এই অন্তবর্তী নির্দেশ কার্যকর থাকবে’৷ ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এহেন ‘সুপ্রিম’ রক্ষাকবচ বিজেপির নেতাদের ভোটযুদ্ধে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কে আরও ভাবিয়ে তুলবে।   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *