বিধানসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু প্রার্থী খুঁজছে বিজেপি

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

বিজেপি তাদের আভ্যন্তরীণ রিপোর্টে পশ্চিমবাংলার ৭৫ টি আসন কে বাতিলের কোটায় রেখেছে। রাজ্যের ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২১৯ টিতে হিন্দুত্ব কে ফোকাসে রেখে বাংলা দখলে আশাবাদী বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সারাদেশের বিজেপির ভোটকুশলিরা গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই ক্রমশ বাংলামুখি।কেন্দ্রীয় মন্ত্রীবর্গ থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব প্রত্যেকেই সাপ্তাহিক সফর সারছেন বাংলায়।বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি কিংবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের কর্মসূচিতে মধ্যাহ্নভোজন আবশ্যিক। কেননা মাটির মানুষ হতে হবে?  তৃনমূল থেকে আসা নেতাদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা এখন ট্রাডিশন বাংলার মুখে।বাংলার ৭০% হিন্দু ভোট অর্থাৎ ২১৯ টি আসনে রাজনৈতিক প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে অবশিষ্ট ৩০% সংখ্যালঘু ভোটে ৭৫ টি আসন কে বাতিলের খাতায় রেখেছে বিজেপি। তবে সাম্প্রতিক সময়কালে এই বাতিল বিধানসভার আসন গুলি নিয়ে পরিবর্তন ঘটছে। কেননা সার্বিক শক্তি দিয়ে তৃণমূল কে পরাস্ত করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি নেতৃত্ব  বিশেষত তৃণমূলের একদা হেভিওয়েট নেতা শুভেন্দু অধিকারী দলে আসায় সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে নুতন করে গবেষণা চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির। অসমর্থিত সূত্রের খবর,  অমিত শাহের ভোট সমীক্ষক টিম নাকি জেনেছে -‘ সংখ্যালঘুদের একাংশ তৃণমূলের উপর ক্ষেপে রয়েছে’। তাই তারা দলে দলে তথাকথিত ‘সাম্প্রদায়িক’ দল বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছে!ব্যক্তি শুভেন্দু অধিকারীর উপর আস্থা রয়েছে সংখ্যালঘুদের একাংশের।তাও বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান সাহেব সম্প্রতি বিধানসভার অলিন্দে শুভেন্দু অধিকারী সহ তাঁর পরিবারের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে জোরালো সওয়াল করেছেন।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বিজেপির চোখে হারবার সম্ভাবনাময় ৭৫ টি আসবে সংখ্যালঘু মুখ খুঁজছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। রাজ্যের দলীয় অফিসে ভোটে প্রার্থী হওয়ার ড্রপব্যাক্সে ইতিমধ্যেই অনেকেই বিধানসভার প্রার্থী হওয়ার জন্য বায়োডাটা জমা দিচ্ছেন। এদের মধ্যে সংখ্যালঘুদের এহেন বায়োডাটা ফেলতে আসার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে বিজেপির অফিস সুত্রে প্রকাশ। বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আলী হোসেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলবদল করার  যোগদান মেলা শুরু করবার সবুজ সংকেত দিয়েছে।  এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকে এইরুপ যোগদান মেলা বিশেষত সংখ্যালঘুদের বিজেপিতে টানতে শুরু হচ্ছে।মন্তেশ্বরের পর পূর্ব বর্ধমানের ভাতার এবং পশ্চিম বর্ধমানে আসানসোলে এই ধরনের যোগদান মেলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। কাটোয়া পুরসভা দখলের তৃণমূলের একদা তুরুপের তাস জঙ্গল সেখ, মঙ্গলকোটের একদা মুকুটহীন সম্রাট ডাবলু আনসারীদের মত ভোটের কারিগরদের পাশে চাইছে বিজেপি।পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে শয়ে শয়ে সংখ্যালঘু মানুষ বিজেপিতে নাম লেখাচ্ছেন।তাদের কাছে সন্ত্রাসের হাত থেকে  বাঁচার প্রতীক হয়ে উঠছে বিজেপি।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – সংখ্যালঘুদের ভোট এবার ত্রিমুখীভাগে ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। একদিকে শাসক দল তৃনমূল যেমন কিছু ভোট পাবে।আবার বাম কংগ্রেসের জোটও পাবে।আবার যদি আসাদউদ্দিন ওয়াইসি – আব্বাস সিদ্দিকির সাথে বাম কংগ্রেসের জোট হয় তাহলে তো সংখ্যালঘু ভোটের বড় অংশ চলে আসবে এখানে। বিজেপি হয়তো এদের মধ্যে সংখ্যালঘু ভোট তেমন পাবেনা।তবে যেগুলিই পাবে সেগুলি শাসকদলের মার্জিন কে নিম্নমুখী করতে কাজে দেবে।এই রুপ ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের তবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৭৫ টি আসনে মুসলিম মুখ কে প্রার্থী করলে তার সামগ্রিক সুফল বাকি ২১৯ টি আসনে পাবে বিজেপি বলে রাজ্য নেতারা মনে করছেন।কেননা রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা আসনে সর্বনিম্ন ১০% থেকে সর্বোচ্চ ৫৫% ভোট রয়েছে সংখ্যালঘুদের।সেখানে বিজেপি যদি বাংলায় মোট আসনে ছয়ভাগের একভাগ দলীয় প্রার্থী দেয়।তাহলে শাসকদল তৃণমূলের দুশ্চিন্তা বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।আইনজীবী থেকে সাংবাদিক, চিকিৎসক থেকে শিক্ষক পেশায় যুক্ত সংখ্যালঘুদের স্বচ্ছমুখ খুঁজছে বিজেপি।আর এই খুঁজে নেওয়ার রাজনৈতিক মঞ্চ শুরু হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মন্তেশ্বর ব্লক থেকে এরপর ভাতার – আসানসোলে শুরু হচ্ছে সংখ্যালঘুদের নিয়ে যোগদান মেলা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *