খায়রুল আনাম,
লক্ষ্যমাত্রার সামান্য নীচে জেলা
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জমা পড়া আবেদন পরীক্ষা করা হবে
রাজ্য সরকার ঘোষিত যে সব প্রকল্পগুলি রয়েছে তারমধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে নানা ধরনের প্রশ্ন তুললেও, সরকারিভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আবেদন জমা নেওয়ার কাজ শুরু হতেই, যাঁরা এর বিরোধীতা করেছিলেন তাঁরাও আবেদন জমা দিতে লাইনে দাঁড়ান। এমন কী, বহু জায়গায় তাঁরা আবেদন জমা দেওয়ার কাজ ত্বরান্বিত করতে হাতও লাগান। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পর অর্থ সংস্থানের ব্যাপারে সুনিশ্চিত করে দেওয়া হয়েছে। জেলা বীরভূমে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ৮ লক্ষ মহিলার নাম নথিভুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিলো। স্বাধীনতা দিবসের পরদিন ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এক মাসের এই কর্মসূচিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় লক্ষ্যমাত্রার সামান্য নীচে থাকা বীরভূম জেলায় ৭ লক্ষ ৯৩ হাজার ২১৩ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেছেন। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মাত্র ৬ হাজার ৭৮৭ জন কম মহিলা নাম নথিভুক্ত করেছেন। নাম নথিভুক্ত করার জন্য প্রথম দিকে জেলার ১৯ টি ব্লকে মাত্র ৬৫ টি শিবিরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু তাতে অত্যধিক ভীড় বাড়ার ফলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায়, এই শিবিরের সংখ্যা আরও ৪২ টি বাড়িয়ে ১০৭ টি করা হয়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে যাঁদের নাম নথিভুক্ত হবে, তাঁদের মধ্যে সাধারণ মহিলারা মাসে ৫০০ টাকা ও তপশিলি এবং আদিবাসী মহিলারা মাসে এক হাজার টাকা করে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পাবেন। জানা যাচ্ছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জমা পড়া আবেদনের মধ্যে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার আবেদন জেলা প্রশাসন পরীক্ষা করে দেখে তা রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাকীগুলি খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। জেলায় অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮ জন, জাতিগত শংসাপত্রের জন্য ১ লক্ষ ৯ হাজার ৭২৮ জন সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন। জেলায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে বর্তমানে ৩ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৫৯ জন সুবিধা পাচ্ছেন। নতুন করে আরও ৮১ হাজার ৭০ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। মিউটেশন, রেকর্ড ও জমি সংক্রান্ত বিষয়ে নিষ্পত্তি চেয়ে ৪৪ হাজার ২১২ জন আবেদন করেছেন। কন্যাশ্রী প্রকল্পে ১১ হাজার ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য ২ হাজার ৪৭০ টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে, জেলায় রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে সবচেয়ে কম সংখ্যক মাত্র ১৭১ টি আবেদন জমা পড়েছে। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে যে, সম্প্রতি জেলার নলহাটি-২ ব্লকে দেখা গিয়েছে যে, বহু আগে বিয়ে হয়ে যওয়া এবং সন্তানের মা- রাও ভুয়ো বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। একটি অসাধু চক্র এবং সরকারি কর্মীদের একাংশের যোগসাজসে এই কাজ হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসার পরে অনেকেই আত্মসাৎ করা টাকা ফিরিয়েও দিয়েছেন। আবার অনেকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে তদন্তও চালানো হচ্ছে। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে রূপশ্রী প্রকল্পে সবচেয়ে কম আবেদন জমা পড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে ।।