মাত্র একটি কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ দিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন হেলাল হাফিজ
কাজী নূর।। কবিতা লিখে মানুষের কাছে পৌঁছানো সহজ কথা নয়। কিন্তু কবিরা এসব নিয়ে ভাবেন না। আপন মনে গেঁথে যান শব্দের কথামালা। তবে কবি হেলাল হাফিজ ব্যতিক্রম। হেলাল হাফিজ মনে হয় আর দশজন মানুষ, এমনকি আর দশজন কবির মতোও নন। হেলাল হাফিজ মাত্র একটি কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ দিয়ে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে নিজেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। জনপ্রিয় বা অমর হওয়ার জন্য কি সারা জীবন অজস্র কবিতা লেখাটা খুব বেশি জরুরি। কবিতা না লিখেও কবিতার আলোচনায় থাকা যায় কিনা- এ প্রশ্নও তিনি সামনে রেখে গেলেন কবি হেলাল হাফিজ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় বিদ্রোহী সাহিত্য পরিষদ- বিএসপি যশোর আয়োজিত প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ এর স্মরণানুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আলোচকরা এসব কথা বলেন।
আলোচরা বলেন, কবিতা লিখে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে গেছেন হেলাল হাফিজ। তার কবিতায় যেমন প্রেমের কথা আছে, বিরহের কথা আছে ঠিক তেমনই খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ, কষ্ট নিয়ে কবিতা লিখেছেন। জীবনের কঠিন কথাও সহজ ও সুন্দরভাবে বলেছেন তিনি। হেলাল হাফিজ বলেছেন, ‘একটা কিছু করুন/এভাবে আর কদিন চলে দিন ফুরালে হাসবে লোকে/ দুঃসময়ে আপনি কিছু বলুন/একটা কিছু করুন’ এ কথাও কি আপনার- আমাদের নয়?
যার কারণে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে হেলাল হাফিজের কবিতা শোনা যায়। তার কবিতা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে গেছে। একটা কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে, কবিদের কিন্তু মৃত্যু নেই। তারা অনন্তকাল বেঁচে থাকেন তাদের সৃষ্টির মাঝে।
যশোর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ায় বিএসপির নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণানুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি ড. শাহনাজ পারভীন, কবি নাঈম নাজমুল, কবি মঞ্জুয়ারা সোনালী, কবি শাহরিয়ার সোহেল।
বিএসপি’র সভাপতি কবি আহমদ রাজুর সভাপতিত্বে স্মরণানুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি গোলাম মোস্তফা মুন্না।
কবি হেলাল হাফিজের জীবনী পাঠ করেন কবি ভদ্রাবতী বিশ্বাস। কবির কবিতা আবৃত্তি করেন কবি আমির হোসেন মিলন, নূরজাহান আরা নীতি, খাদিজা ইতু, কাজী নূর, মুস্তাফিজুর রহমান, সঞ্জয় নন্দী।
কবি হেলাল হাফিজের উপর নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কবি আবু দাউদ মোসলেহ উদ্দিন রতন, এম এ কাসেম অমিয়, অমল কান্তি সরকার, রবিউল হাসান, এসএম তোজাম্মেল হক, অ্যাড. মাহমুদা খানম, ইরফান খান প্রমুখ।
সভায় বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় মরোত্তর স্বাধীনতা পদক ও একুশের পদক দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি হেলাল হাফিজের বিদেহী রুহয়ের মাগফিরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।