মারণ ভাইরাস করোনার থাবায় নিহত মা বাবা ভাই, একা ঈশানী

Spread the love

খায়রুল আনাম, ২৩ মে

করোনার মারণ ছোবল
 মা, বাবা, ভাইকে হারিয়ে একাকী লড়াই ঈশানীর 
       
সময়ের ব্যবধান স্বল্প। কিন্তু তারই মধ্যে করোনার মারণ ছোবলে এক এক করে মা, বাবা আর ভাইকে হারিয়ে  এখন করোনাকে জয় করার একাকী বাঁচার লড়াই ঈশানীর। তবে, তাঁর মধ্যে বেঁঁচে ওঠার তাগিদটাও যে তেমন আর নেই, তা ঈশানীর কথা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শোকে বুজে আসা গলায় ঈশানীর অস্পষ্ট উচ্চারণ–আমার বলার মতো আর কিছুই নেই।      জেলা বীরভূমের সদর শহর সিউড়ীর নতুন ডাঙালপাড়ার অবসর প্রাপ্ত পদস্থ ব্যাঙ্ক কর্মী রামদাস সিংহের পরিবার  এলাকার মানুষের কাছে কেবলমাত্র যে সম্ভ্রান্ত পরিবার হিসেবেই পরিচিত তাই নয়, এলাকার মানুষের কাছে এই পরিবারটি শিক্ষা, সাংস্কৃতিক  বোধ সম্পন্ন এবং পরোপকারী পরিবার হিসেবেও যথেষ্ট পরিচিত।  করোনার মারণ ছোবলে প্রায় শেষ হয়ে গেল এই পরিবারটি। পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্যা ঈশানী  সিংহ এখনও লড়াই করে চলেছে  এই মারণ ছোবলের বিরুদ্ধে।      এই পরিবারের কর্ত্রী দীপ্তি সিংহ  দিন চৌদ্দ আগে  প্রথম জ্বরে  আক্রান্ত হলে একটি বেসরকারী পরীক্ষাগারে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।  তাঁকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়  সিউড়ী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় রামপুরহাট  মেডিকেল কলেজের কোভিড হাসপাতালে। পরে পরিবারের প্রধান  রামদাস সিংহ, তাঁর ছেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের  গবেষক ছাত্র রাজদীপ সিংহ এবং মেয়ে সিউড়ী বিদ্যাসাগর কলেজের আংশিক সময়ের অধ্যাপিকা ঈশানী সিংহ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁদের প্রত্যেককেই ভর্তি করা হয় রামপুরহাট মেডিকেল কলেজের কোভিড হাসপাতালে।      এখানে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হার মেনে দীপ্তি সিংহ (৬১) প্রয়াত হন ১৩ মে। তখনও সেখানেই করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন পরিবারের প্রধান  রামদাস সিংহ, মেয়ে ঈশানী সিংহ ও  ছেলে রাজদীপ সিংহ। দীপ্তিদেবীর প্রয়াণের  এক সপ্তাহ পরে ২০ মে মারা যান পরিবারের কর্তা  ৬৯ বছরের  রামদাস সিংহ। এর একদিন পরেই তাঁদের ছেলে  রাজদীপ সিংহ (২৮) মারা যায় ২১ মে। মাত্র ৯ দিনের মধ্যে করোনার ছোবলে  প্রাণ যায় একই পরিবারের তিনজনের। আর এখন সেই একই কোভিড হাসপাতালে করোনার সাথে পাঞ্জা লড়ছেন সিংহ পরিবারের একমাত্র  জীবিত সদস্যা ঈশানী সিংহ। আর একত্রিশ বছরের ভাগ্নির এই জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতে উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটি থেকে  চলে এসেছেন তাঁর লড়াকু মামা  চন্দন ঘোষ।। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *