মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,
রাজনীতির মঞ্চে সবই সম্ভব। একুশে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য এবং ভোটের ফলাফল প্রকাশ পরবর্তীতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সৌগত রায়ের মত গুরত্বপূর্ণ নেতাদের ইংগিত বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা কৃষ্ণনগরের বিধায়ক মুকুল রায়ের রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে নানান প্রশ্নচিহ্ন তুলছে।একাধারে যেমন করোনা আক্রান্ত মুকুল রায়ের স্ত্রী কে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তেমনি আবার মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের সমালোচনা করেছেন।এরপর রাজ্য বিজেপির গুরত্বপূর্ণ বৈঠকে গড়হাজির মুকুল কে ঘিরে নানান জল্পনা বাংলার রাজনীতিতে। সর্বপরি বাংলার গেরুয়া শিবিরে যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী প্রভাবশালী নেতা হিসাবে প্রকাশ পাচ্ছেন। তাতে মুকুল রায় কি করবেন, তা নিয়ে দোলাচালে বিজেপি। রাজ্য বিধানসভায় বিধায়ক হিসাবে শপথ গ্রহণের সময় যেভাবে ভিআইপি গেট দিয়ে ঢুকে বিরোধী দলের বিধায়ক মুকুল রায় বিধানসভার সচিবালয়ের অফিসারদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ কিংবা পুরাতন দলের সহকর্মী সুব্র্ত বক্সীর সাথে হাসিমুখে কুশল বিনিময় ঘটিয়েছিলেন। তাতেও মুকুল রায় কে ঘিরে বিজেপির অন্দরমহলে দেখা গিয়েছিল ফাটল। একুশে বিধানসভা ভোটে প্রচারে নন্দীগ্রামে এসে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন – ” মুকুল কিন্তু শুভেন্দুর মত অত খারাপ নয়! বেচারা কে কৃষ্ণনগরে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। ব্যারাকপুর – নৈহাটি ওর নিজের এলাকা। সেখানেই দিতে পারতো “। মমতার এহেন মন্তব্য ঘিরে বিজেপির অন্দরমহলে অবিশ্বাসের বাতাবরণ গড়ার অভিযোগ উঠলেও ফলপ্রকাশের পরে যেভাবে বিধানসভা ভবনে ভিআইপি গেটে ঢুকে তৃণমূল নেতাদের সাথে কুশল বিনিময় ঘটিয়েছিলেন মুকুল। তাতে মুকুলের সাথে গোপন যোগাযোগ রয়েছে তৃণমূলের, এমনও দাবি বিভিন্ন সুত্রে।যদিও মুকুল রায় তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে মুকুল রায়ের স্ত্রী কে দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন – ” বিজেপির কয়েকজন সাংসদ সহ জেতা বিধায়ক তৃণমূলে ফেরার জন্য যোগাযোগ রাখছেন “। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় বেসুরো হয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আবার রাজ্য বিজেপির গুরত্বপূর্ণ বৈঠকে গড়হাজির ছিলেন মুকুল রায়। তার উপর নরমপন্থী হিসাবে মুকুল রায় বরাবরই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিয়ে কোন বিতর্কিত মন্তব্য করেন নি।এহেন অবস্থানকারী মুকুল রায় কে নিয়ে তৃণমূলের দমদমের সাংসদ সৌগত রায় মুকুলের প্রত্যাবর্তন এর সম্ভাবনা নিয়ে ইংগিত দিলেন। তাতে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পুনরায় চলে এলেন মুকুল রায়।