মোল্লা ওয়াসিম আক্রাম, ,
কলকাতা পুলিশ অনেক আগেই মহিলা পুলিশদের নিয়ে গড়েছে উইনার্স।এতদিন পর মুম্বাই পুলিশ গড়লো নির্ভয়া স্কোয়ার্ড।রাতের শহরে মহিলাদের জন্য আর কোনওভাবেই নিরাপদ থাকছে না এমন প্রশ্নই উঠে আসে প্রায়। শুধু রাত কেন নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে যে কোনও সময়েই। সাকিনাকা ধর্ষণকাণ্ডের পরে নারী সুরক্ষায় মু্ম্বই পুলিশের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে নির্ভয়া স্কোয়াড। মেয়েদের আব্রু বাঁচাতে লড়াই করবে পুলিশের মেয়েরাই। কলকাতা শহরে অনেকদিন আগেই মহিলা রক্ষী বাহিনী তৈরি হয়েছে। দিবারাত্র শহরের নানা প্রান্তে নজর রেখে চলেছেন মহিলা বাহিনীর লড়াকু অফিসাররা। কলকাতায় এই টিমের নাম ‘উইনার্স।মুম্বই পুলিশ কমিশনার হেমন্ত নাগরালে গত বুধবার একটি সার্কুলার জারি করে বলেছেন, নারী সুরক্ষায় মুম্বই পুলিশের মহিলা বাহিনীকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি টিম। এই টিমের নাম হবে নির্ভয়া স্কোয়াড। দিনে-রাতে যেখানেই বেআব্রু হবে মহিলাদের নিরাপত্তা, সেখানেই ছুটে যাবে এই রক্ষী বাহিনী। নিরাপত্তা দেবে ২৪ ঘণ্টা। মুম্বইয়ের সবকটি থানায় থাকবে মহিলাদের নিয়ে তৈরি এই নিরাপত্তা বাহিনী। প্রতি টিমে থাকবেন একজন মহিলা পিএসআই ও এএসআই পদমর্যাদার অফিসার, একজন মহিলা কনস্টেবল, একজন পুরুষ কনস্টেবল ও ড্রাইভার। এসিপি পদমর্যাদার একজন মহিলা আধিকারিককে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হবে। প্রতি থানায় পাঁচটি মোবাইল ভ্যান রাখার হবে টহলদারির জন্য। দিনে-রাতে নির্ভয়া স্কোয়াড এই মোবাইল ভ্যানে গোটা শহর চষে বেড়াবেন। এই গাড়িগুলোকে বলা হবে ‘নির্ভয়া ফটক।’ এই স্কোয়াডকে দু’দিনের প্রশিক্ষণের পরে কাজে নিয়োগ করা হবে। স্কুল, কলেজ, শপিং মল, সিনেমা হল-থিয়েটার, রেস্তোরাঁ আশপাশে টহল দেবে এই মহিলা স্কোয়াড। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে ২৪ ঘণ্টা। শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, ইভটিজিং এর মতো ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেবে, পকসো আইনে অভিযোগ দায়ের করবে। নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিয়ে শহরজুড়ে প্রচারও চালাবে এই টিম। শহরের বিভিন্ন হোস্টেল, মেস, অনাথ আশ্রম, হোমেও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় মেয়েদের। শিশুদের ওপর নির্যাতন, এমনকি শিশু পাচারের ঘটনাও ঘটে। অপরাধীদের হুমকির জেরে অনেক অভিযোগ থানা অবধি পৌঁছায় না। সেসব দিকেও নজর দেওয়ার দায়িত্ব থাকবে এই বাহিনীর ওপরে। শহরের যে জায়গাগুলিতে আগেও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে সেখানে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। ‘নির্ভয়া কমপ্লেন্ট বক্স’ রাখা হবে শহরের নানা জায়গায়। যে মহিলারা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন, তাঁরা এই বক্সে নিজেদের অভিযোগ লিখে জানাতে পারবেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেবে মহিলা স্কোয়াড। সম্প্রতি মহানগরে র পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে এক ইভ টিজারকে পাকড়াও করেছে কলকাতা পুলিশের মহিলা স্কোয়াড। এর আগে একাধিকবার ইভটিজিং, শ্লীলতাহানির ঘটনা রুখেছে। শহরের নানা প্রান্ত থেকে অপরাধীদের গ্রেফতারও করেছে। দিনে হোক বা রাতের শহরে, মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছিল কলকাতা পুলিশকে। প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, রাস্তায় বেরিয়ে সুরক্ষিত নন মহিলারা। এই অভিযোগ যে অমূলক নয়, বিভিন্ন ঘটনায় তার প্রমাণও পাওয়া গেছে নানা সময়। তাই মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য প্রমীলা বাহিনী তৈরি করা হয়। এই বাহিনীর নাম হয় ‘দ্য উইনার্স’। এই মহিলা অফিসারদের লক্ষ্য হল, মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়া। রাস্তাঘাটে, বাজার, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, শপিং মল যেখানেই কোনও গণ্ডগোল বাঁধুক বা মহিলারা বিপদে পড়লে দ্রুত পৌঁছে যাবে এই প্রমীলা বাহিনী। নারী সুরক্ষায় রায়গঞ্জেও তৈরি হয়েছে মহিলা স্কোয়াড। চিলি স্প্রে, ইলেক্ট্রিক ব্যাটন, বডি ক্যামেরা নিয়ে শহরজুড়ে ঘুরে বেড়াবেন ৩০ জন মহিলা কনস্টেবলের দল। নজর রাখবেন নারী সুরক্ষার দিকে। শহরের যেকোনও জায়গায় কোনও মহিলা বিপদে পড়লেই ছুটে যাবে এই রক্ষা বাহিনী। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপেও নেয় এঁরা । কলকাতা পুলিশের পর মুম্বাই পুলিশের নির্ভয়া স্কোয়ার্ড কতটা কার্যকরী ভূমিকা নেয় তা সময় বলবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।