সমাজ কল্যাণে এগিয়ে এলো যাদবপুর বিদ্যাপীঠ অ্যালামনি এসোসিয়েশন
ফারুক আহমেদ,
যাদবপুর বিদ্যাপীঠ অ্যালামনি এসোসিয়েশন ৪২ বছর আগে তৈরী হওয়া একটি সংস্থা। এখনো নিজ মহিমায় ভাস্বর হয়েই সমাজ কল্যাণে কাজ করছে। কথা বকছুলেন সুব্রত দাশগুপ্ত, সভাপতি, যাদবপুর বিদ্যাপীঠ এলামনি এসোসিয়েশন। “আমরা কেউ ৫০ বছর, কেউ ৪০ বছর, কেউ ৩০ বছর আবার কেউ বা ২০, ১০ বা ৫ বছর আগে স্কুল ছেড়েছি, কিন্তু স্কুলের সঙ্গে সম্পর্ক আজও অটুট। যখন স্কুলে পড়তাম তখনকার দিনগুলি আর আজ এত বছর পরের অনুভুতি একেবারেই আলাদা। এবং এটাই তো স্বাভাবিক। বিদ্যাপীঠ মানেই আমাদের কাছে এক শ্যামলীম স্মৃতিমেদূরতা।
এতদিন আমাদের সংস্থার কর্মকান্ড মূলতঃ স্কুলকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হতো। স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের প্রয়োজনে পাশে থাকা, আর মাঝে মাঝে সংস্থার উদ্যোগে অনুষ্ঠানে সমবেত হওয়া।
কিন্তু এবার আমরা ইচ্ছেডানা মেলেছি। কোভিড ১৯ এর লকডাউনে সমস্যায় পড়া মানুষদের সাহায্যার্থে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অর্থ পাঠালাম আমরা। আরো ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা করতে করতেই এলো আমফান। বিপুল ক্ষয়ক্ষতি রাজ্যজুড়ে। আমাদের কাছেই সুন্দরবন অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। অর্থ সাহায্যের ডাক দেওয়া হলো। সম্পাদক, রাজা মুখোপাধ্যায় নিজে ২০ হাজার টাকা দান করলেন। তহবিল গঠন শুরু হলো। অনেকে এগিয়ে এলেন। কেউ কেউ আবার অন্য জায়গা থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দিলেন। প্রত্যাশা ছাপিয়ে তহবিল ভরে উঠলো।
সংস্থার পক্ষ থেকে অরূপ সেনগুপ্ত (কার্যকরী সভাপতি) ও মনিশংকর প্রথম ত্রাণ নিয়ে গেলো দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘীতে। প্রায় ৫৫ হাজার টাকার সামগ্রী। ডাল, তেল, সাবান, মশারী। তুলে দেওয়া হলো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মীলনীর কেন্দ্রীয় ত্রাণ কেন্দ্রে। বিকেলেই সেই মশারী চলে গেলো কুলতলির প্রত্যন্ত প্রান্তে, দুর্গত মানুষদের কাছে।
দ্বিতীয় দফায় ত্রাণ দেওয়া হলো উত্তর ২৪ পরগণার হাসনাবাদ ব্লকের কালীতলা গ্রামে। এবারে দলে ছিলো অরূপ, দিব্যেন্দু আর অনিরুদ্ধ। ইছামতীর পারে বাংলাদেশ সীমান্তের এপারে। এবার সরাসরি সামগ্রী বিতরণ ১২০ জন অসহায় মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হলো মুসুর ডাল, সরষের তেল, সয়াবিন, ছাতু, বিস্কুটের বড় প্যাকেট, সাবান, নুন, চিঁড়ে এবং মহিলাদের জন্য স্য্যনিটারি ন্যাপকিন ।
একসময় মনে হচ্ছিলো যদি আরো কিছু প্যাকেট নিয়ে আসতে পারতাম! সত্যিই কি নিদারুণ কষ্টে রয়েছে মানুষগুলি!
মন ভরে গিয়েছে দুদিনই এই কর্মসুচীতে থাকতে পেরে। আর একটা কথা না বললেই নয়। এই দুদিন-ই ওই প্রত্যন্ত প্রান্তে ত্রাণ নিয়ে গিয়ে সেখানকার মানুষদের যে হৃদয়স্পর্শী আতিথেয়তা পেয়েছি তা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর সময় জুড়ে থেকে যাবে মনের মণিকোঠায়।
দীর্ঘজীবী হোক যাদবপুর বিদ্যাপীঠ অ্যালামনি এসোসিয়েশন।”