রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি
পারিজাত মোল্লা ,
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ৮৪তম প্রয়াণদিবসে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে কবিগুরুর প্রতি অন্তরমথিত শ্রদ্ধা নিবেদন করল জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি অন্তর্গত রবীন্দ্রভারতী সোসাইটি।এদিন সকাল সাতটার সময় মহর্ষিভবনের দোতলায় রবীন্দ্রপ্রয়াণ কক্ষে কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, সাথে ছিলেন সোসাইটির কর্মকর্তাবৃন্দ সহ সদস্য/সদস্যাগণ। সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয় “আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে…”। ঠাকুরবাড়ির বাইরে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর মর্মর আবক্ষমূর্তিতে মাল্যার্পণ করে প্রণাম জানানো হয়। এর পর নিমতলা মহাশ্মশানে কবিগুরুর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক স্থাপন করে শ্রদ্ধা জানান সোসাইটির সহ-সভাপতি অনিন্দ্য কুমার মিত্র, সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়, সহ-সম্পাদক রঞ্জিত কুমার নায়ক, কোষাধ্যক্ষ গৌরাঙ্গ মিত্র, কর্মপরিচালন সমিতির সদস্য সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সোসাইটির সদস্য/সদস্যাবৃন্দ। অশ্রুসজল চোখে সমবেত কণ্ঠে তিনটি রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে কবিগুরুর উদ্দেশে স্মৃতিতর্পণ করা হয়।এদিন বিকাল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রথীন্দ্রমঞ্চে। কবিস্মরণের সাথে শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর ১৫৪ তম জন্মদিন পালন করা হয়। প্রধান অতিথি রূপে কলকাতা পুলিশ কমিশনার শ্রী বিনীত কুমার গোয়েল আই পি এস, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শ্রী ছন্দম চক্রবর্তী, অতিরিক্ত নগরপাল (২) আরক্ষা বিভাগ হিসাবে শুভঙ্কর সিনহা সরকার আই পি এস, অতিরিক্ত নগরপাল (৩) সন্তোষ পান্ডে আই পি এস, স্থানীয় পৌরপিতা রাজেশ সিনহা উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে। সোসাইটির তরফে উপস্থিত ছিলেন কর্মপরিচালন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রী সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় এবং সদস্য শ্রী ধীমান দাস। রথীন্দ্রমঞ্চে স্থাপিত কবিগুরু এবং শিল্পগুরু অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানান মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ববর্গ। অতিথি বরণ ও সম্বর্ধনা প্রদানের পর প্রারম্ভিক ভাষণ দেন সাধারণ সম্পাদক শ্রী সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। এর পর বক্তৃতা করেন নগরপাল শ্রী বিনীত কুমার গোয়েল আই পি এস। “অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মারক বক্তৃতা” প্রদান করেন শ্রী ছন্দম চক্রবর্তী। সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সোসাইটির সহ-সম্পাদক শ্রী রঞ্জিত কুমার নায়ক। এর পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আমন্ত্রিত কলকাতা পুলিশকর্মীবৃন্দ সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। শ্রুতিনাটক “কর্ণকুন্তীসংবাদ” পরিবেশন করেন প্রদীপ খাঁড়া ও নবনীতা ঘোষ। একক নৃত্য পরিবেশন করেন শ্রীমতী মনীষা পাল। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শ্রী প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী, শ্রী শুভেন্দু অধিকারী, শ্রী নিরুপম দত্ত, শ্রী দীপঙ্কর রপতান, শ্রীমতী শ্রিয়া ঘোষ, শ্রী দেবজিৎ চ্যাটার্জী ও শ্রী অম্বরীশ ঘোষ। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন শ্রী শ্যামল বিশ্বাস, শ্রীমতী নবনীতা ঘোষ। নগররক্ষার কাজে নিযুক্ত পুলিশকর্মীবৃন্দের সাংস্কৃতিক চর্চা ও পরিবেশনে প্রতিটি পর্ব হয়ে উঠে শ্রুতিমধুর অনবদ্য। শেষ পর্যায়ে সমবেত কণ্ঠে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠান পর্ব সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী শ্রী সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।