রাজনীতিবিদ এবং ব্যঙ্গচিত্র

Spread the love

রাজনীতিবিদ এবং ব্যঙ্গচিত্র

:- পিনাকী চৌধুরী।। একজন ব্যঙ্গচিত্রী তাঁর রঙ, তুলির আঁচড়ে সুনিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তোলেন একজন বিখ্যাত মানুষের বাইরের সুন্দর চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা লোভ,লালসা বা দুর্নীতিবাজ কদাকার চেহারাটা ! আসলে এই ব্যঙ্গচিত্র বা কার্টুন আঁকতে গেলে প্রথমেই কার্টুনিস্ট কে উক্ত বিখ্যাত মানুষটির যাবতীয় কার্যকলাপ গভীর অভিনিবেশ সহকারে পর্যবেক্ষণ করতে হয় । তারপর তিনি অবলীলায় এঁকে ফেলেন ব্যঙ্গচিত্র! আর সেই ব্যঙ্গচিত্র বর্তমান দুনিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার। বহুক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, কার্টুনিস্ট রাষ্ট্রের বা রাজনীতিবিদদের রোষানলে পড়েন। এমনকি তাঁর কাছে হুমকি ফোনও এসেছে। বাংলায় প্রথম নিখাদ রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্র আমার দেখতে পাই কাফি খা ওরফে পি.সি.এল ( প্রবোধ চন্দ্র লাহিড়ি) এর আঁকা থেকে। আসলে তার আগে মূলত সামাজিক ব্যঙ্গচিত্র বেশি আঁকা হত। পরবর্তী সময়ে বিখ্যাত কার্টুনিস্ট চন্ডী লাহিড়ী, অমল চক্রবর্তী, প্রমথ সমাদ্দার প্রমুখের ব্যঙ্গচিত্র বিশেষ মাত্রা পেয়েছিল। বাস্তবে সমাজে যখনই কোনও অনাচার বেড়ে যায়, ঠিক তখনই একজন ব্যঙ্গচিত্রী সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ হন এবং তিনি তাঁর কার্টুনের মাধ্যমে প্রতিবাদ সংগঠিত করেন। তবে এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। একজন কাঠখোট্টা টাইপের রাজনীতিবিদ যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে সহজ, সরল, অনাড়ম্বর জীবন যাপন করেন এবং হয়তোবা খাদ্যরসিক সেই রাজনীতিবিদ হাসি ঠাট্টায় মেতে ওঠেন, কার্টুনে এমন নিদর্শনও রয়েছে। আসলে একজন ব্যঙ্গচিত্রী বা কার্টুনিস্ট কোনও বিখ্যাত মানুষের বাইরের আভরণ নয়, অন্তরের আচরণকে প্রত্যক্ষ করেন! কার্টুনিস্টের থিওরি হল ‘ All politicians are dishonest, till proved innocent ‘ । ইদানিং অনেক রাজনীতিবিদ কার্টুনিস্টদের ওপর রুষ্ট হন। কিন্তু শোনা যায়, ১৯৬২ সালে ভারত চিন যুদ্ধের সময় বিখ্যাত কার্টুনিস্ট আর .কে লক্ষণের আঁকা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর ব্যঙ্গচিত্র দেখে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, আর কে লক্ষণের তিনি সেই কার্টুন নিয়ে নিজের সংগ্রহে রেখেছিলেন।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *