রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা কখনোই জনস্বার্থ হতে পারে না, হাইকোর্ট

Spread the love

মোল্লা জসিমউদ্দিন, ১১ ফেব্রুয়ারি

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা কখনোই জনস্বার্থ হতে পারেনা, জানালো হাইকোর্ট 


‘রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আদালত নয়’ এহেন পর্যবেক্ষণ রেখে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট বিজেপির রথযাত্রা সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ করে দিলো।শুধু তাই নয় এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ বিন্ডাল এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার পর্যবেক্ষণে আরও জানিয়েছে যে – ‘ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা এই মামলা কখনোই জনস্বার্থ হতে পারেনা ‘। বৃহত্তর স্বার্থ যেখানে জড়িত সেটিই হবে জনস্বার্থ মামলা।এক্ষেত্রে মামলাকারী আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় রেখে মামলা টি দাখিল করেছিলেন। নিজেকে তৃনমূল লিগ্যাল সেলের সদস্য হিসাবে উল্লেখ রেখেছেন তিনি।তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে করা এই মামলাটি জনস্বার্থ মামলা হিসাবে খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চ। করোনা পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে বিজেপির তথাকথিত রথযাত্রা ( যদিও বিজেপির দাবি এটি পরিবর্তন যাত্রা)  বন্ধে জনস্বার্থ মামলাটি দাখিল করেছিলেন এই আইনজীবী। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ, পরবর্তীতে ডিভিশন বেঞ্চে উঠে এই মামলা।এমনকি বিজেপির রথযাত্রা বন্ধে মামলাকারী একাধারে চিঠি দিয়ে পুলিশ প্রশাসন কে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। আবার ডিভিশন বেঞ্চে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারীর পিটিশন দাখিল করেছিলেন।ইতিমধ্যেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা রথযাত্রার সূচনা ঘটিয়েছেন বাংলায়।কোথাও উৎসাহ উদ্দীপনা, আবার কোথাও মিশ্র চাঞ্চল্য দেখা গেছে এই রথযাত্রা কে ঘিরে গত মঙ্গলবার  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চে বিজেপির রথযাত্রায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন মামলাকারী আইনজীবী। তবে কলকাতা হাইকোর্ট এহেন অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারীতে রাজি ছিলনা।এই মামলায় বিজেপি কে পক্ষভুক্ত করা হয়েছিল।। যদিও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এটি কে রথযাত্রা না বলে একুশে বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তন যাত্রা হিসাবে তুলে ধরছে।সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে রমাপ্রসাদ রায় নামে এক আইনজীবী বিজেপির ঘোষিত রথযাত্রা নিয়ে মামলা দাখিল করেছিলেন। মূলত রথযাত্রাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে বলে দাখিল করা পিটিশনে জানানো হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারিতে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রা ( রথযাত্রা)  শুরু হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ভবন নবান্ন স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অনুুমতি বিষয়টি বিবেচনাধীন বলে জানিয়েছে।গত ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে এহেন রথযাত্রার পরিকল্পনা সেরে ফেলেছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে সেবার গোয়েন্দা রিপোর্ট কে হাতিয়ার করে রথযাত্রা আটকানো গেছিল বাংলার বুকে।তবে বহু চর্চিত একুশে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে হিন্দুত্ব কে হাতিয়ার করে রাজ্যের ৫ জায়গা থেকে রথযাত্রা বের করবার চরম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে বঙ্গ বিজেপি। টার্গেট হিসাবে সনাতন হিন্দুদের পীঠস্থান নবদ্বীপ ধাম, তারাপীঠ, কোচবিহার, বেলুড় আবেগময় স্থান গুলি কে রাখা হয়েছে। উদ্বোধক হিসাবে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ইতিমধ্যেই রথযাত্রা সূচনা করে দিয়েছেন ।রাজ্যের ২৯৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র কে ছুঁয়ে যাওয়ার ছক কষে ফেলে রেখেছে বিজেপি নেতৃত্ব।তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির  রথযাত্রা বাংলায় অন্য মাত্রা এনে দিতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ বিন্ডালের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে করা হয়েছে পর্যবেক্ষণ রেখে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে খারিজ করে দিলো। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *