রাজভবনে শ্লীলতাহানি কান্ডে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিনিধি,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় আইনী স্বস্তি পেল রাজভবন। রাজ্যপালের ওএসডি সঞ্জীব কুমার সিং-সহ বাকি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের তদন্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত ওই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে এদিন নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। গত ১৫ মে হেয়ার স্ট্রিট থানায় ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।এদিন সঞ্জীব কুমারের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান , -‘ ১৯ মে দুপুর ১টা ৪০মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপে নোটিস পাঠিয়ে দুপুর দুটো থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। এটা কোন ধরনের তদন্ত। রাজভবনের কর্মী, অফিসারদের হেনস্থা করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। প্রথমে যখন পুলিশে অভিযোগ করা হয়, তখন ওই অফিসারদের কারও নাম ছিল না। কয়েকদিন পর তাঁদের নামে এফআইআর করা হয়েছে’।রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, -‘ রাজ্যপালকে আড়াল করার জন্য এই ধরনের মামলা করা হয়েছে। আমাদের কাছে শ্লীলতহানির অভিযোগের স্বপক্ষে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অভিযোগকারী তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁকে থানায় অভিযোগ জানাতে বারণ করা হয়েছিল। অভিযুক্তরা এই ঘটনায় নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। তিনি রক্ষাকবচ পেয়েছেন। তাঁদের তদন্তে সহযোগিতা করতে অসুবিধা কোথায়?’ দু পক্ষের বিচারপতি সিনহা বলেন, -‘ অভিযোগের কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসঙ্গতি রয়েছে। ঘটনার কয়েকদিন পর অভিযোগ জানানো হয়েছে’। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘ওই শ্লীলতাহানির মামলায় দায়ের হওয়া এফআইআরের ভিত্তিতে নতুন করে কাউকে তলব করা যাবে না’। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১০ জুন। ততদিন পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।সম্প্রতি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন রাজভবনেরই এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী। চাকরিতে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত করার প্রলোভন দেখিয়ে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেছেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।হেয়ার স্ট্রিট থানায় জমা পড়া ওই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর রুজু করে ঘটনার তদন্তে নামে লালবাজার। রাজ্যপালের ওএসডি সন্দীপ সিংহ-সহ রাজভবনের তিন কর্মীকে তলব ৪১ এ ধারায় তলব করে লালবাজার।এ ব্যাপারে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে লালবাজার সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ রাজভবনের কর্মীদের। এরপরই এ বিষয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। ওই আবেদন শুনানিতেই এদিন সংশ্লিষ্ট মামলায় পুলিশের তদন্তের উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত।তাই প্রমাণ নষ্ট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এই নির্দেশে আপাতত স্বস্তি ফিরেছে রাজভবনে। ওএসডি-র বিরুদ্ধে পাঁচ দিন পর কেন অভিযোগ তোলা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত।অভিযোগকারিণী দাবি করেছেন, -‘তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল’। তিনি আদৌ আটকেছিলেন কি না সেটা তদন্তের বিষয় বলে মনে করছেন বিচারপতি। বিচারপতি সিনহা বলেন, এই মুহূর্তে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিলে মূল তদন্ত প্রভাবিত হবে বলে মনে হয় না।