রাতের নিস্তব্ধতা
ইন্দ্রানী গুপ্ত
মনটা ডুবে রয়েছে বহু বছর ধরেই,
বদলেছে পৃথিবী, বদলেছে কষ্টগুলো,
আমার কষ্ট আর নষ্ট মন নিয়ে
ক্লান্তি ভরা চোখে লিখেই চলছি
নিস্তব্ধতার কবিতা,
নীরব নিস্তব্ধ হয় যখন এই শহর
শুরু হয় কবিতার সাথে আমার
সময় কাটানোর প্রহর ।
সময় যায় কেটে কতটা? পারি না করতে ঠাহর;
চোখের পাতায় নেমে আসে ঘুম
শুনতে পাই পাতারা ঝরে ঝরঝর ।
নিরাশার ধুলো এসে আবছা করে চোখ
কি নিয়ে লিখি! কি করে লিখি
দু এক ফোঁটা অশ্রুরাও করে না আমায় বিমুখ ।
চারিদিকে এত বাঁধা আর সমস্যার দেয়াল
কিবোর্ডে হাতের ছোঁয়ায় দু:খ উঠে আসে কখন;
করিনা যে খেয়াল ।
সব রাতই হয় শুধু কবিতারই রাত
কাটে না সময় তার হাতে রেখে হাত ।
চাওয়া পাওয়া শেষ, আর কিছু নাই
রাত জেগে শুধুই হতাশার কবিতা বানাই।
রাতের আকাশে জ্বলে মিটি মিটি তারা
নিয়ন আলোয় ছাই রং হয় সবুজ পাতারা।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফোটা যেন ঝরছে হয়ে শিশির
একা একা দেখা হয়,
কবিতা আর নিশির।
কল্পনায় শুনি সুমধুর সুর, কে জানি বাজায় বাঁশি
কল্পনা ভেংগে দেয়,
ঘেউ ঘেউ একদল কুকুরের অট্টহাসি ।
অসময়ে আর ডাকে না বসন্তের কোকিল
দু:খ পোকারা মাথায় করে সারাক্ষণ কিলবিল ।
এমনি করে কেটে যায় অনেকটা প্রহর
চারিদিকে নিশি ঘুমে ঘুমন্ত নগর ।
কবিতায় চলে আসে সব কষ্ট
অযথাই কলমের কালি হয় নষ্ট ।
কোথায় রাত কেটে যাবে, পেয়ে তার আদর সোহাগ
হেলায় হেলায় দুরে ঠেলে সুখ,
কেন হায় এত অনুরাগ ।
জ্বলে পুড়ে মরে যেন সে তার অহঙ্কারে
একদিন বুঝবে,
তখন নুয়ে পড়বে ব্যথার ভারে ।
কবিতার রাতগুলোয় জমা হয় দু:খ পাহাড়
রাত বাড়ে একে একে খুলে যায় কষ্ট দুয়ার।
নিস্তব্ধ রাতে আমি জেগে একাকি
গুনগুন গান শুনায় নিরাশার পাখি।
তৃষ্ণার্থ মনে অজানা শব্দগুলোরে কাছে ডাকি,
অনুরাগের ছন্দে ভরা কবিতারে নিয়েই তাই থাকি
আমার কষ্টগুলো আরো উন্মুখ হয়ে আছে
বিস্ফোরণের আশায়,
আমি তাকিয়ে থাকি দূর দিগন্তের দিকে,
কষ্টগুলো লাল হতে আরো লাল হয়ে
পশ্চিমাকাশে ছড়ায় রঙ্গিন আভা _
কষ্ট ক্লান্তি আর বিষাদের নিস্তব্ধতার মাঝে….
রাতের আকাশের মাঝে খুঁজে দেখো এই নিস্তব্ধতা কথা বলে,নিয়ে যাবে দূরের কোনও তারার দেশে যা ভাসিয়ে নিয়ে যাবে দূরে,যা ফিরে পাবার পথ পাবেনা কিন্তু ধ্রুবতারা ,সপ্তর্ষি মন্ডল পথ দেখিয়ে নিয়ে আসবে রাতের অন্ধকারে ভোরের শুকতারা দেখার জন্য। নিস্তব্ধতা কেটে উঠুক ভোরের আলোয়, উদ্ভাসিত হোক নতুন কোনও ওম যা ভোরের আলোতে ছড়িয়ে পড়ুক ভুবনডাঙ্গার মাঠে….