মোল্লা জসিমউদ্দিন
ভারতীয় সংবিধানের আইন রেকর্ড সংশোধন করার জন্য একপ্রকার বিচারের অধিকার দিয়েছে ভূমি আধিকারিকদের। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্র বাদী বিবাদী পক্ষ ভুমি আইন সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ অবগত না হওয়ায় আইনজীবীদের দারস্থ হন। আপিল লেখা থেকে নিদিষ্ট দিনের শুনানিতে উপস্থিত থাকেন মক্কেলদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনজীবীরা। এটায় মূলত রেওয়াজ হয়ে আসছে। তবে বর্গাদারি ক্ষেত্রে ভূমি দপ্তরের শুনানিতে আইনজীবীদের অংশগ্রহণ করার কোন এক্তিয়ার নেই। বিশ্বব্যাপী মারণ ভাইরাস করোনার সংক্রমণে দিশেহারা সবাই। অফিস আদালত একপ্রকার বন্ধ বলা যায়। আইনজীবীরাও পাঁচমাস কর্মহীন বলা যায়। অনেকেই কর্মস্থল ছেড়ে নিজ নিজ পৈতৃক বাড়িতে এসেছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের স্বনামধন্য সিভিল ও ক্রিমিনাল বিভাগের আইনজীবী জ্যোতিপ্রকাশ চট্টপাধ্যায় সপরিবারে এসেছেন পূর্ব বর্ধমানের দেশের বাড়িতে। গলসির বাসিন্দা পার্থসারথি শ্যামের এক রেকর্ড সংশোধনের আইনীভাবে সহযোগিতা করাতে সম্প্রতি তিনি চুক্তিবদ্ধ হন। পূর্ব বর্ধমান জেলার ভূমি দপ্তরের আধিকারিকের গত ৩ আগস্ট প্রেরিত শুনানির নোটিশে গত ১২ আগস্ট দুপুরে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে মক্কলের সাথে ওই আইনজীবী যান৷ গলসি ২ নং ব্লকের গলসি মৌজার জেএল নাম্বার ৬৪, দাগ নাম্বার ৫১৯৬, পরিমাণ ৪১ শতক জায়গায় বাণিজ্যিক নির্মাণ ঘিরে আইনী বিবাদের সুত্রপাত। অভিযোগকারী পার্থসারথি শ্যাম বিষয়টি স্থানীয় বিএলআরও , বিডিও থেকে জেলার সমস্ত আধিকারিকদের লিখিত জানিয়েছেন। একদা গলসি ২ নং বিডিও ওই জায়গায় নির্মাণের অনুমতি দিলেও অভিযোগের গুরত্ব বুঝে চলতি বছরে গত ৩০/০৬ তারিখে অনুমতি প্রত্যাহার করে নেন। মাঠ খসড়ায় ওই জায়গাটি ডোবা হিসাবে উল্লেখ হলেও এলআর তে রয়েছে বাস্তু।বিতর্কিত জায়গার আইনী সমাধানের জন্য গত ১২ আগস্ট দুপুরে বর্ধমান শহরে অবস্থিত জেলা ভুমি সংস্কার দপ্তরে মক্কেল পার্থসারথি শ্যামের হয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে যান আইনজীবী জ্যোতিপ্রকাশ চট্টপাধ্যায় মহাশয়। ভূমি আধিকারিকের চেম্বারে মক্কেলের সাথে ঢুকতেই গন্ডগোলের সুত্রপাত। করোনা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে অত্যাধুনিক মাস্ক পড়ে গিয়েও ওই আইনজীবী কে প্রথমে শুনতে হয় – ‘ কলকাতা থেকে করোনা নিয়ে এসেছেন? আপনাকে এখানে কে আসতে বললো? ঘর থেকে বেড়িয়ে যান। ‘ এইবিধ নানান অপমানকর মন্তব্যের শিকার হন ওই আইনজীবী বলে দাবি। পরে ওই অভিযোগকারী ব্যক্তি কেও কত টাকা দিয়েছেন বলেও নাকি শুনতে হয়। অপমানিত আইনজীবী জানান – “১৯৬১ সালের এডভোকেট আইন অনুযায়ী বিচারবিভাগীয় বৈধতা রয়েছে আইনজীবীদের এহেন ভূমি দপ্তরের শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে। শুধুমাত্র বর্গাদারি ক্ষেত্রে আইনজীবীদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আইনজীবীদের”।তবে জেলা ভূমি আধিকারিক তথা এডিএম ( ল্যান্ড) ফোনে এই প্রতিবেদক কে জানান – ” কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি উনার সাথে , ডিসপুট ল্যান্ড নিয়ে এটি রুটিন শুনানি। যেখানে আইনজীবীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। শুধুমাত্র বাদী বিবাদী পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়। “। অপরদিকে গলসি ২ নং ব্লকের বিডিও সাহেব জানান – ” ওই বিতর্কিত জায়গায় অভিযোগ পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছ। এটি বিচারধীন বিষয়”। জানা গেছে, গলসির ওই বিতর্কিত জায়গায় গলসি ২ নং ব্লকের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃনমূলের যুব সভাপতি সুজন মন্ডল এক বাণিজ্যিক নির্মাণ কাজ শুরু করেন। অভিযুক্ত পক্ষের পক্ষে অবশ্য সমস্ত কিছু আইনমাফিক ভাবে মানা হচ্ছে দাবি করা হয়েছে।