শিক্ষক ও কবি গৌতম রায়ের স্মৃতি সন্ধ্যা এবং গৌতম স্মারণি পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন
সেখ রিয়াজুদ্দিন বীরভূম:- চব্বিশ বছর আগে ভেলোরে বড়ো মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে দূর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রান হারান পিতা। সংসারে চার বোন ও মা কে নিয়ে চলে কঠিন জীবন সংগ্রাম। দীর্ঘ চব্বিশ বছর জীবন লড়াই সংগ্রামের পাশাপাশি পিতার স্বপ্নের ডালি নিয়ে ১২ ই জুন সন্ধ্যায় লোকপুর মহামায়া মন্দির সংলগ্ন স্থানে গৌতম রায়ের স্মৃতি সন্ধ্যা নামক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।২৪ বছর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে ২৪ টি প্রদীপ প্রজ্বলন এবং মৃত শিক্ষকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।গৌতম বাবুর পরিচয়ে জানা যায় তিনি লোকপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা রাজনগর ব্লকের ভবানীপুর হাইস্কুলের গনিতের শিক্ষক ছিলেন। সেই সাথে আঞ্চলিক কবিতা লিখে বেশ সুনাম অর্জন করেন।পাশাপাশি বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য হিসেবেও জেলা ব্যাপী বিভিন্ন সচেতনতা মূলক নাটক বা ম্যাজিকের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে গেছেন। গৌতম বাবুর স্বরচিত কবিতা সহ তার বন্ধুবান্ধব,আত্মীয় স্বজন, সহকর্মী, ছাত্র- ছাত্রী সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষজনের লেখার সম্ভারে সজ্জিত গৌতম স্মরণী নামক পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয় এদিনের মঞ্চ থেকে। পুস্তক উন্মোচন করেন কবি সমরেশ মন্ডল, লোকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তারাদাস চ্যাটার্জী এবং গৌতম বাবুর ছাত্রী বর্তমানে খয়রাসোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবর। শিক্ষক, কবি এবং সমাজসেবী হিসেবে তাঁর বিভিন্ন ঘটনার প্রসঙ্গ উপস্থাপনের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন অতিথিবৃন্দ।এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি অসীম শীল,লোকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মনোজ বিশ্বাস ও দ্বিজেন পাল, লোকশিল্পী নারায়ণ কর্মকার, রাঙামাটির ফসল পত্রিকার সম্পাদক সুনীল সাহা,স্থানীয় পঞ্চায়েতের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক অঞ্জন চ্যাটার্জী সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে বারবার পিতার শোকে মেয়ের কখনো কখনো কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এলেও সুচারুভাবে সঞ্চালন করেন গৌতম বাবুর বড়ো মেয়ে মৌমিতা রায় নায়ক। একান্ত সাক্ষাৎকারে মৃত শিক্ষকের বড়ো মেয়ে মৌমিতা রায় নায়ক বলেন দীর্ঘদিন পর স্মরণ সভা করার কারণ নিজেদের জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি বাবার কবিতার পান্ডুলিপি চুরি হয়ে যাওয়া এসব উদ্ধার করতে গিয়ে বহু সময় ব্যয় হয়েছে। আগামী দিনে পান্ডুলিপি উদ্ধার হলে নতুনভাবে কিছু করার মনোবাসনা রয়েছে।