শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মামলাগুলিতে স্থগিতাদেশ, ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনওরকম এফআইআর করা যাবে না, ২৬ টির মতো এফআইআর কপিতে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করল রাজ্য সরকার । সূত্রে প্রকাশ , মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ২৬ মাসে ২৬টি এফআইআর দায়ের করেছিল রাজ্য পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হয়ে চলা একের পর এক এফআইআরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। আদালতের কাছে তাঁর আবেদন ছিল, হয় এফআইআরগুলি খারিজ করে দেওয়া হোক, নয়তো অভিযোগের তদন্ত করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে দায়ের করা সমস্ত এফআইআরে স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি।উল্লেখ্য , শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিহিংসার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এফআই দায়ের করা হয়েছে। শুনানিতে রাজ্য পুলিশকে ভর্ত্সনা করেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। এর আগে শুভেন্দু অধিকারী কে রক্ষাকবচ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ। তার পরেও কী ভাবে এত এফআইআর তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়?সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ।রাজ্যের কাছে এ বিষয়ে হলফনামাও তলব করে হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেই হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে । তবে তার আগেই হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গেল রাজ্য। রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী আবু সোহেল এই মামলা করেছেন বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় আইনী জয় পেয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে তিনি সিবিআই তদন্ত চেয়েছিলেন, সিঙ্গেল বেঞ্চ অবশ্য তাতে সায় দেয়নি।কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে তিনি ওইদিন(৮ ডিসেম্বর) তাঁর বিরুদ্ধে এখনও অবধি ২৬ টি ফৌজদারি মামলায় অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ পেয়েছেন।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ২৬ মাসে ২৬টি এফআইআর দায়ের করেছে রাজ্য পুলিশ।গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সেইসব এফআইআরের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।রাজ্য পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে দু ডজনের বেশি এফআইআর দায়ের করেছে, যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু। ওইদিন এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, -‘ পুলিশ স্বেচ্ছায় অথবা কারওর নির্দেশে একজনের বিরুদ্ধে এফআইআরের বিরুদ্ধে বন্যা বইয়ে দিচ্ছে’।উল্লেখ্য , শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ -‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিহিংসার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এফআই দায়ের করা হয়েছে’।ওইদিন এজলাসে এই মামলার শুনানিতে পুলিশকে ভর্ত্সনা করেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার। বিচারপতি বলেন, -‘ পুলিশ রাজ্যের বিরোধী দলনেতার গতিপ্রকৃতি আটকাতে রাজ্যের হয়েই কাজ করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না’। এরপরই নির্দেশ জারি করেছিলেন বিচারপতি, সিঙ্গেল বেঞ্চের আদেশনামায় উল্লেখ রয়েছে -‘ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনও এফআইআর করলে কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিতে হবে’।রাজ্যের তরফ থেকে ওইদিন এজি এজলাসে জানান , -‘ গত ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বারবার নোটিশ পাঠানো হলেও কোনওভাবেই তাতে সাড়া দেননি মামলাকারী’। যদিও রাজ্যের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েই শুভেন্দুর নামে করা সব এফআইআরের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ।তাঁর বিরুদ্ধে হয়ে চলা একের পর এক এফআইআরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। আদালতের কাছে তাঁর আবেদন , -‘ হয় এফআইআরগুলি খারিজ করে দেওয়া হোক, নয়তো অভিযোগের তদন্ত করুক সিবিআই’। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, -‘ শুভেন্দু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি মানুষের ভোটে নির্বাচিত। পুলিশ নিজে অথবা অন্য কারও নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনে জনগণের প্রতি বিরোধী দলনেতার কর্তব্য স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে’। এর আগে শুভেন্দুকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল আদালত। তার পরেও কীভাবে এত এফআইআর তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হয়? সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খোদ বিচারপতি।রাজ্যের কাছে এ বিষয়ে হলফনামা তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ। ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেই হলফনামা জমা দিতে হবে আদালতের কাছে । তারপর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে, -‘অন্য কোনও সংস্থার হাতে এই মামলাগুলির তদন্তের ভার দেওয়া হবে কি না’? অর্থাৎ সিবিআই তদন্ত জারির সম্ভাবনা রইলো তাতে।এই সব মামলা (২৬টি) র নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। এর ফলে বড়সড় আইনী স্বস্তি পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । তবে সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।ওইদিন হাইকোর্টে শুভেন্দুর আইনজীবী জানিয়েছেন, -‘ বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে একই সময় ৬টি এফআইআর হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এফআইআর করেছে’। সব মিলিয়ে মোট এফআইআরের সংখ্যা ২৬টি । শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে অধিকাংশ এফআইআর হয়েছে বলে দাবি করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী।শুভেন্দুর তরফে আরও অভিযোগ, -‘ যখনই রাজনৈতিক সভায় কিছু বলা হচ্ছে, সেই বক্তব্য ধরে এফআইআর করা হচ্ছে। এমনকী টুইট করলেও অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে’। এছাড়া, ৪১এ ধারায় প্রায়ই নোটিস দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। শুভেন্দুর আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, -‘ এফআইআরে নাম, বাবার নাম কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিহিংসার জন্যই এই সব এফআইআর করা হচ্ছে ‘। তবে রাজ্যের তরফে এজি প্রশ্ন তোলেন, -‘ ৪১এ নোটিসে সমস্যা কোথায়? তিনি (শুভেন্দু) কবে আসবেন, সেই সময় ও তারিখ জানতে চেয়েই এই নোটিস দেওয়া হয়েছিল’। উল্লেখ্য, পুলিশের কাছে হাজিরা দেওয়ার জন্যই এ ৪১এ নোটিস দেওয়া হয়। ওইদিন এজলাসে এজি-র আরও প্রশ্ন -‘শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ আগেই দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেন নতুন করে আবার সুবিধা পাবেন?’ গত বৃহস্পতিবার এই মামলার সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি রাজশেখর মান্থা শুভেন্দুর প্রসঙ্গে বলেন, -‘ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁর সন্দেহ আদালত সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিতে পারে না। পুলিশ নিজে অথবা একদল মানুষের প্ররোচনায় একের পর এক অভিযোগ এনে, জনগণের প্রতি তাঁর যে কর্তব্য, তা স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে’। এরপর সব এফআইআর-এ স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে রাজ্যের কাছে।ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আপিল পিটিশন দাখিল করেছে রাজ্য সরকার। খুব তাড়াতাড়ি ডিভিশন বেঞ্চে এই আপিল মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।