মোল্লা জসিমউদ্দিন
পাঁচমাসের বেশি সময়কাল ধরে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে চলছে ধাপে ধাপে লকডাউন। দীর্ঘদিন এহেন অচলাবস্থা চলাকালীন প্রত্যেক পেশার মানুষের জীবনে নেমে এসেছে আর্থিক অনিশ্চয়তা। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে ৭ নং রাজ্য সড়কপথে পড়ে ছিল টাকা ভর্তি মানিব্যাগ। সাথে এটিএম কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কৃষাণ ক্রেডিট কার্ড সহ নানান দরকারী জিনিসপত্র। এই মানিব্যাগ টি পড়ে থাকতে দেখে মঙ্গলকোটের পদিমপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জামিরুল ওরফে জামু মুন্সি সযত্নে নিজকাছে রেখেদেন৷ বিষয়টি সোশাল মিডিয়ায় বিশেষত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘বাংলার খবরাখবর’ তে পোস্ট করা হয়। ওই গ্রুপে আবার রয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার অধিকাংশ থানার ওসি। মানিব্যাগে থাকা কাগজপত্র দেখে জানা যায়, মাধবডিহির উচালন এলাকার অখিলেন্দু মালিক নামে এক ইলেক্ট্রিক অফিসের ঠিকেদারের। মাধবডিহি ওসি পুস্পেন্দু জানা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রধান মারফত মানিব্যাগ মালিকের কাছে খবর পাঠান। আবার অন্যদিকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকা দক্ষিণ দামোদর এলাকার সাংবাদিক কৃষ্ণ সাহা বিষয়টি বহু খোজাখুজি করে অখিলেন্দু মালিক কে অবগত করান। মঙ্গলবার সাতসকালেই মাধবডিহি থেকে মঙ্গলকোটের নুতনহাটে হাজির হন অখিলেন্দু বাবু। তাকে তার সমস্ত কাগজপত্র তুলে দেওয়া হয়। গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র পেয়ে খুব খুশি তিনি। গত সোমবার ছিল চলতি মাসের প্রথম লকডাউন। খুব জরুরি প্রয়োজনে বর্ধমান শহর থেকে ভায়া নুতনহাট হয়ে বীরভূমের লাভপুরে যাচ্ছিলেন। নুতনহাটের হাইস্কুল মোড়ে জল খাওয়ার জন্য দাঁড়ালে অন্যমনস্কতায় পকেট থেকে পড়ে যায় মানিব্যাগ টি। মানব্যাগটি হয়তো তার কাছে খুব গুরত্বপূর্ণ। তার চেয়েও গুরত্বপূর্ণ বেশি লকডাউনে জামিরুল ওরফে জামু মুন্সির মতন ব্যক্তিদের সততা। সততার এই নজিরে কলম – মিস্টির বিনিময় ঘটলো এক নুতন সম্পর্কের……