সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় গেরুয়া ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংহের ৩ দিনের সিবিআই হেফাজত
মোল্লা জসিমউদ্দিন, ২৬ অক্টোবর
বুধবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল আদালতে পেশ করা হয় চিটফান্ড মামলায় গেরুয়া ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংহ কে। এদিন আসানসোল আদালত সিবিআইয়ের ৫ দিনের হেফাজতে রাখার আবেদনে ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি করেছে। গত মঙ্গলবার চিটফান্ড মামলায় সিজিও কমপ্লেক্সে ম্যারাথন জেরা করা হয়েছিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংহকে। জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে থাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।এদিন ধৃতকে আদালতে পেশ করা হলে ধৃতের ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় আসানসোল আদালত।সিবিআই সুত্রে প্রকাশ, ‘বর্ধমান সানমার্গ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’ চিটফান্ড মামলার তদন্তে নেমে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।এর পাশাপাশি উঠে এসেছে একটি ব্যাঙ্কক ভ্রমণ বিষয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা জানাচ্ছেন , -‘ওই ব্যাঙ্কক যাত্রার স্পনশর ছিলেন এই ব্যবসায়ী। সেই ট্যুরে ওই ব্যবসায়ী নিজেও গিয়েছিলেন’। উল্লেখ্য, এই কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে হালিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানির। প্রসঙ্গত, এই মামলায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন রাজু সাহানি, সঞ্জয় সিংহ সহ মোট ৩ জন। সিবিআইয়ের অভিযোগ,-‘ চিটফান্ডের টাকা কাজে লাগিয়ে একটি মিডিয়া কোম্পানি খুলেছিলেন সঞ্জয় সিংহ। এরপরে সেই মিডিয়া সংস্থা বন্ধ করে দিয়ে টাকা আত্মসাত্ করা হয়। চিটফান্ডের টাকা কোথায়, তা জানতেই তদন্ত চলছে’।প্রসঙ্গত, বর্ধমান সানমার্গ চিটফান্ড সংস্থার চেয়ারম্যান সৌম্যরূপ ভৌমিক প্রথম থেকেই পলাতক। তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করতে পারেনি।সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় এবার হালিশহর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান রাজু সাহানির ব্যবসায়ীক সুত্রে সঞ্জয় সিংকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। বর্ধমান সানমার্গের অরগানাইজেশন প্রতারণা মামলায় দুর্গাপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় সিংকে গত মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই।সেখানে টানা ১০ ঘণ্টা জেরা করার পর মঙ্গলবার রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।সানমার্গ চিটফান্ড মামলায় এই নিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করল সিবিআই । গত ২ সেপ্টেম্বর হালিশহর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, -‘ সানমার্গের বিপুল পরিমাণ টাকা এসেছিল তৃণমূলের চেয়ারম্যানের কাছে। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, যার উত্স তিনি বলতে পারেননি। তারপরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে’। আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক ও তৃণমূল নেতা প্রণব চট্টোপাধ্যায়কে। বর্তমানে জামিনে মুক্ত তিনি।গত মঙ্গলবার বেলা ১১টা নাগাদ রাজু সাহানির ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সঞ্জয় সিংকে বেশকিছু নথিপত্র সহ সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছিল। সেখানেই তাঁকে টানা ১০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় গত মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সূত্রে প্রকাশ , সঞ্জয় সিংয়ের একাধিক ব্যবসার সঙ্গে সানমার্গ চিটফান্ড সংস্থার যোগ আছে বলে জানা গেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আরও একাধিক নাম উঠে আসতে পারে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছেবুধবার সকালে তাকে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে। অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়কালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে ভোট দেওয়ার জন্য টাকা পয়সার অফার দিয়েছিল এই সঞ্জয় সিং। তৃণমূলের অভিযোগ -‘ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হয়েই সম্ভবত এই কাজ সে করেছিল’। এই দাবি তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী থানার অভিযোগপত্রে লিখেছিলেন।নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্থানীয় থানায় এই অভিযোগ করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।গত ১৭ জুলাই এই মামলা করেছিল নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। কয়েকদিন জেল হেফাজতে থাকার পর মুক্তি পেয়েছিলেন সঞ্জয় সিংহ।এরপর গত মঙ্গলবার জেরা করার পর সিবিআই চিটফান্ড মামলায় গ্রেপ্তার করলো।বুধবার আসানসোল আদালতে পেশ করা হলে ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ জারি হয়