সালন্দার লক্ষ্মীপুজো যেন সম্প্রীতির জ্বলন্ত নিদর্শন
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
সাধারণত লক্ষ্মীপুজো হয় দু’দিনের। কিন্তু মঙ্গলকোটের সালন্দা গ্রামের সার্ব্বজনীন শ্রী শ্রী লক্ষ্মীপুজোর তাৎপর্য অন্যত্র। গত ৩১ বছর ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সৌজন্যে কার্যত এখানে পুজোর রেশ থাকে পাঁচ দিন ধরে। শুধু গ্রামবাসীরা নয়, পুজোয় মেতে ওঠে পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা। আত্মীয় স্বজনে ভরে ওঠে গ্রাম। গ্রামে দুর্গাপুজো হলেও সবার উপস্থিতিতে লক্ষ্মীপুজোর মধ্যে পাওয়া যায় দুর্গাপুজোর স্বাদ।
পুজো উপলক্ষ্যে গত ২৯ শে অক্টোবর এলাকার নৃত্য ও সঙ্গীত এবং অঙ্কন শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত হয় একটি প্রতিযোগিতার। পাশাপাশি গ্রামগুলি থেকে বহু ক্ষুদে শিল্পী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
একটা সময় গ্রামের যেকোনো উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল নাটক যার সমস্ত চরিত্র ছিল মহিলা। ধীরে ধীরে কেবল মহিলাদের দ্বারা অভিনীত নাটক যখন অবলুপ্তির পথে তখন ৩০ শে অক্টোবর রাজু চৌধুরীর নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় মহিলাদের নাটক ‘গরীবের মেয়ে’। নাটকে অংশগ্রহণ করে গ্রামের মেয়েরা। আবহ সঙ্গীত প্রয়োগ করেন রাজু চৌধুরী ও অদিতি রায়।
এবছরও গত ৩১ শে অক্টোবর প্রশান্ত ব্যানার্জ্জী ও রেখা ব্যানার্জ্জীর সৌজন্যে ৩০ জন পুরুষ ও মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয় লুঙ্গি ও শাড়ি। 'লক্ষ্মীমাতা মিউজিক্যাল ট্রুপস'-এর স্থানীয় শিল্পী সামসুরনিহার সুহানা, দিশা, আদি,স্নেহা, অদিতি প্রমুখদের পরিবেশিত সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি পাঠ উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
উদ্যোক্তাদের অন্যতম স্বপন রায় বললেন - সবার সহযোগিতায় গত ৩১ বছর ধরে লক্ষ্মীপুজোর সময় আমরা বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান করে চলেছি। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা যেভাবে উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে এসেছে সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। যাদের সহযোগিতায় এতবড় একটা অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়েছে তাদের প্রত্যকের কাছে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।