সিসিটিভি ক্যামেরার তার কারা কাটছে মঙ্গলকোটে? গোষ্ঠী বিবাদে রয়েছে কি কোন অভিসন্ধি? 

Spread the love

সিসিটিভি ক্যামেরার তার কারা কাটছে মঙ্গলকোটে? গোষ্ঠী বিবাদে রয়েছে কি কোন অভিসন্ধি? 

মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে জেলা পুলিশের লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরার তার কারা কাটছে? তা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।বিশেষত  মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে হাই মাদ্রাসা পর্যন্ত এহেন কর্মকান্ডে অনেকেই আতঙ্কে রয়েছেন বলে এলাকা সুত্রে প্রকাশ।বেশিরভাগ অপরাধ মূলক ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ পুলিশের কাছে  । যদিও মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ নিজে সাদা পোশাকে মোটরবাইকে এইসব এলাকায় নজরদারি শুরু করেছেন  বলে জানা গেছে। বর্তমান সময়ে প্রাক শীতে রাত দীর্ঘ হওয়ায় দুস্কৃতি কিংবা সুপারি কিলারদের কোন অভিসন্ধি রয়েছে কিনা? তা অত্যন্ত গুরত্ব সহকারে দেখছে পুলিশ। যদিও পুলিশের তরফে এই বিষয়ে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের হানাহানির ইতিহাস কম নয়। বিগত বাম জমানায় বসন্ত দত্ত – শিশির ঘোষ – শিশির চ্যাটার্জি – হরপ্রসাদ গোস্বামী – গোপেশ্বর পাল – ফাল্গুনী মুখার্জিরা যেমন খুন হয়েছেন আততায়ীদের হাতে।ঠিক তেমনি তৃণমূল আমলে আজাদ মুন্সি – অসীম দাস – ডালিম সেখ প্রমুখ খুন হয়েছেন দুস্কৃতিদের কাছে।নিহতদের মধ্যে জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান পদমর্যাদা পূর্ন জনপ্রতিনিধিরা যেমন রয়েছেন। ঠিক তেমনি জোনাল নেতা, অঞ্চল সভাপতি পদের নেতৃত্বরাও রয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি মঙ্গলকোটের দুটি খুনের (ডালিম সেখ,অসীম দাস) মামলায় তদন্তভার পায়।তবে মঙ্গলকোটে আজ অবধি রাজনৈতিক  কোন খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্তর নজির সেভাবে নেই । মঙ্গলকোটে তৃণমূল আমলে গোষ্ঠী বিবাদের রসায়ন ক্রমশ বদলেছে সময়ের গতিতে। একসময় রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্ধিকুল্লাহ চৌধুরী (মঙ্গলকোটের প্রাক্তন বিধায়ক)  বনাম অপূর্ব চৌধুরীর (মঙ্গলকোটের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি)  বিবাদ রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল মঙ্গলকোট।রহিম মল্লিক – বসিরউদ্দিনদের মত সিদ্ধিকুল্লাহ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠরাই বর্তমানে অপূর্ব চৌধুরীর কাছের লোক।আবার মেহবুব চৌধুরী – রেজাউল মুন্সি – শান্ত সরকাররা মঙ্গলকোটের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে ক্রমশ পরিচিতি পাচ্ছেন স্থানীয় রাজনীতিতে।বর্তমানে মঙ্গলকোট বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী দলীয়ভাবে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান বটে।তাই তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা সারা জেলা জুড়ে কম-বেশি বিদ্যমান। আবার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা কাটোয়ার বর্ষীয়ান বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে অপূর্ব চৌধুরীর ঠান্ডা লড়াই রয়েছে বলে দলের অনেকেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকভাবে জানিয়েছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মঙ্গলকোট থেকে শ্যামাপ্রসন্ন লোহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি হওয়ায় মঙ্গলকোটের শাসক দলের গোষ্ঠী বিবাদে নুতন মাত্রা এনেছে। প্রথম দিকে মঙ্গলকোটের কৈচরে বিধায়ক অফিসে প্রতিনিয়ত দেখা যেত সভাধিপতি কে।বর্তমানে দলীয়  ঘোষিত কর্মসূচী ছাড়া সেভাবে দেখা যায় না এঁদের কে। কার অনুগামী সর্বাধিক? সেই প্রতিযোগিতার সাক্ষী হয় এই মঙ্গলকোট !দু-পক্ষ কে এলাকায় পুজোর ভূরিভোজন করতে দেখা যায়। যদিও এই ট্রাডিশন অতীতেও ছিল।মঙ্গলকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন সরকার ওরফে শান্ত যেখানে দলীয় অফিস গড়েছিলেন, সেই অফিসে আজও চব্বিশ ঘন্টা পুলিশি পাহারা দেখতে পাওয়া যায়।শান্তবাবু যেসব জমি / জায়গা কিনেছেন সেগুলিও বর্তমানে বিভিন্ন মামলার বেড়াজালে আটকে পড়েছে। এতেও অনেকে গোষ্ঠী বিবাদের ষড়যন্ত্র দেখছেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকবার শান্ত সরকারের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় সিসিটিভি ক্যামেরার তার কারা কাটছে? তা নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। মঙ্গলকোট  বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী নিজেকে উন্নয়নমূলক কাজকর্মে এবং দলীয় সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে মঙ্গলকোটের ১৫ টি অঞ্চলে সাধারণ কর্মীসমর্থকদের নিয়ে ধারাবাহিক জনসংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন বিধায়ক। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *