স্বপ্নের দেবদাস
ইন্দ্রানী গুপ্ত
শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’ এর পার্বতীকে আমার খুব ঈর্ষা হতো।
দেবদা তাকে কী রুদ্ধশ্বাস সব অভিযানে নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে স্বপ্নে আসে, সেরকমই দেবদার সঙ্গে
আমার দেখা হয়েছিল এমনি বর্ষা রাতে,
স্বপ্নে এমন হয়ে দেখা দিল সেই প্রেমিক মানুষটি,
নিয়ে গেলেন নদীর ধারে আমাকে চাঁদ দেখাতে, নিয়ে গেলো সেই নদীর মাঝখানে।
নদীর পাশে পোড়ো মন্দির, বস্তিও আছে,
বস্তির পাশে দীর্ঘ রেল ব্রিজ।
সেই ব্রিজে ছোট ছোট বারান্দা মতন করা আছে। নিকষ অন্ধকারে রেল ব্রিজের উপর দিয়ে হেঁটে তেমনই একটা বারান্দা তে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করালো নদীর ঠিক মাঝখানে। নীচে প্রগাঢ় আঁধারে বর্ষার সাথে নদীর গর্জন।
নদীর ওপারে আলো মিট মিট করছে।
ক্রমে নদীর বুকে আলো ছড়িয়ে চাঁদ উঠলো।
কৃষ্ণা প্রতিপদের প্রায় গোল চাঁদ ভাসতে লাগলো নদীর বয়ে আসা জলে। নদীর ধারের জঙ্গল যেন জমাট বাঁধা অন্ধকার। কোথাও কোনও শব্দ নেই। একা নদী কথা বলছে। এমন সময় পূব আকাশে চাঁদকে সাক্ষী রেখেই পশ্চিম আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো।
এক সঙ্গে চাঁদ ও দেয়া কখনও দেখিনি।
কিছুক্ষন পর স্বপ্ন গেল ভেঙে,
খানিক পর নিজের মধ্যে ফিরলাম।
ফিরতেই দেখলাম যে বৃষ্টি ঝরছে অঝোর ধারায়, চাঁদ মেঘে ঢাকা।
মনে হচ্ছিল চাঁদ কেন আসেনা আমার ঘরে, হারিয়ে গেল পারোর দেবু.. বৃষ্টি তখন আরও জোরে। বুঝলাম স্বপ্ন এখনও মরেনি,বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
আজও হয়তো এই বৃষ্টি ভেজা রাতে নতুন কোনও স্বপ্ন দেখতে দেখতে ভোরের আলো ফুটে উঠবে।
নতুন প্রভাত সকলের স্বপ্ন পূরণ করুক এই কামনা রইলো…