সেখ সামসুদ্দিন ,
ইতিমধ্যেই রাজ্যে বেশকিছু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দুর্নীতির জন্য মোটা অংকের আর্থিক জরিমানা করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে গতি আনতে কলকাতা হাইকোর্টে দাখিল হলো মামলা। বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসাথী হেল্পডেস্কে বসানো হোক সরকারি আধিকারিক। এই আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হলো জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীর অভিযোগ, -‘ বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মৌখিকভাবে বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত নথি না দেওয়ায় অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।এরফলে সরকারও প্রমাণের অভাবে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা না দেওয়া হলে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিক সরকার ও স্বাস্থ্য কমিশন’। মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিষেবা ঠিকঠাক পৌঁছে দিতে কড়া অবস্থান নিয়েছেন বরাবরই । বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোগীদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছে হাসপাতাল। এই অভিযোগে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।দাখিল মামলায় অভিযোগ, -‘ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা মুখে বললেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হাসপাতাল থেকে। আর ফিরিয়ে দেওয়ার কোনও লিখিত দিচ্ছে না। এরফলে রেফারের কোনও প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি, হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী ‘হেল্প ডেস্ক’ আছে ঠিকই। তবে তার নিয়ন্ত্রণ হাসপাতালের হাতেই।এরফলে কাকে জানানো হবে সমস্যার কথা? তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠছে। পাশাপাশি, সরকারের কাছে কী করে পৌঁছাবে প্রমাণ? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে’। মামলাকারীর আরও দাবি, -‘ হাসপাতালগুলিতে ‘হেল্প ডেস্কে’ সরকারের নিজের লোক রাখতে হবে। কাউকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা না দেওয়া হলে তত্ক্ষনাত্ হেল্প ডেস্কে অভিযোগ নেওয়া হোক। অভিযোগ এলে সরাসরি হস্তক্ষেপ করুক স্বাস্থ্য কমিশন। দ্রুত নিষ্পত্তি করুক স্বাস্থ্য কমিশন’। জানা গেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা দাখিল হয়েছে। আদালত কে মামলাকারী জানিয়েছেন -‘ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথীর হেল্প ডেস্ক আছে, তবে তার নিয়ন্ত্রণ হাসপাতালের হাতেই। এরফলে এই প্রকল্পের পরিষেবা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছে। তা ছাড়া কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা সরকারের কাছে পৌঁছবে কী করে? সরকার যে হেল্পলাইন নম্বর দিয়েছে সেখানে অনেক সময় যোগাযোগই করা যায় না’। মামলাকারীর আদালতের কাছে আবেদন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতাভুক্ত হাসপাতালগুলির হেল্প ডেস্কে সরকারি প্রতিনিধি থাকুক। এই প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া না হলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ নেওয়া হোক। অভিযোগ ফেলে না রেখে দ্রুত নিষ্পত্তি করুক রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন।কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ আগামী সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে ।স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে একাধারে যেমন বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে, ঠিক তেমনি রোগীদের ঠিকঠাক চিকিৎসা পরিষেবা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।এখন দেখার কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলার পরিপেক্ষিতে কি নির্দেশ দেয়?
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে সুবিধায় স্বচ্ছতা আনতে হাইকোর্টে মামলা
