হাইকোর্টে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন মানিক ভট্টাচার্য
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
টানা দু বছর জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে জামিন পেলেন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ এদিন মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের নির্দেশ দেন। কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র দায়ের করা মামলায় জামিন পেলেন নদীয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর দ্বিতীয় তৃণমূল বিধায়ক হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যকে। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি। মানিক ভট্টাচার্য প্রায় দশ বছর ওই পদে ছিলেন।মানিক ভট্টাচার্য জামিন পেলেও তাঁকে একাধিক শর্ত মানতে হবে বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। তদন্তে সহযোগিতার পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যকে তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, -‘নিয়মিত নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে হবে মানিক ভট্টাচার্যকে। নিম্ন আদালতের সীমানার বাইরেও যেতে পারবেন না তৃণমূল বিধায়ক’।মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ ওএমআর শিট নষ্ট করে দেওয়া, ওএমআর শিটে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর অদল বদলের নির্দেশ দেওয়ার মতো একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছে সিবিআই ও ইডি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জামিন পেয়ে গেলেন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি।আদালত সুত্রে প্রকাশ, ইডি-র দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান মানিক ভট্টাচার্য। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে মানিক ভট্টাচার্যকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে, তদন্তে সাহায্য করতে হবে, ট্রায়াল কোর্টে হাজিরা দিতে হবে। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের সীমানার বাইরে যেতে পারবেন না মানিক।কোনও সাক্ষীর উপরে যাতে কোনও প্রভাব না খাটানো হয়, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিচারপতি। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে গ্রেফতার করা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যকে। এর আগে মানিক একাধিকবার জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু বারবারই তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে বলে ইডি প্রতিবারই জামিনের বিরোধিতা করেছিল।
শুনানি চলাকালীন এজলাসে মানিককে কান্নায় ভেঙে পড়তেও দেখা যায়। ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন মানিকের স্ত্রী ও ছেলেও। হাইকোর্ট পরে তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দেয়। মানিকের পুত্র শৌভিক জামিন পান সুপ্রিম কোর্ট থেকে।