‘১০০ দিনের টাকার সহায়তা শিবির’ – বিল্বগ্রামে
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
গ্রামের গরীব মানুষের আয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কংগ্রেস পরিচালিত দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের আমলে ‘মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্মসংস্থান আইন’ -এ গ্রামীণ গরীব পরিবারগুলির জীবিকার নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতি বছর কমপক্ষে একশ দিনের কাজ দেওয়ার ঘোষণা করা হলেও দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় দু’বছরের বেশি সময় ধরে এইরাজ্যে একশ দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ। এমনকি কাজ করেও গরীব মানুষগুলোকে নিজেদের প্রাপ্য মজুরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
দাবি আদায়ের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী বারবার কেন্দ্র সরকারকে চিঠি করেছেন। নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জী দিল্লিতে এবং কলকাতায় রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন। তাও প্রাপ্য বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কলকাতার রাজপথে ধর্নায় বসেছেন।
গত ৩ রা ফেব্রুয়ারি ধর্নামঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন - রাজ্যের বঞ্চিত ২১ লক্ষ মানুষের ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য অর্থ ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার তাদের এ্যাকাউন্টে দিয়ে দেবে। যদিও সংখ্যাটা ২৪ লক্ষাধিক হওয়ায় তিনি কয়েকদিন অতিরিক্ত সময় চেয়ে নিয়েছেন এবং ঘোষণা করেছেন ১ লা মার্চ থেকে প্রাপ্য মজুরি দেওয়া হবে।
তার এই ঐতিহাসিক ঘোষণার পর সেটি বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জ্জী এক ভার্চুয়াল বৈঠকে দলের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তার ঘোষণা অনুযায়ী ১৮-২৫ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে রাজ্যের ৩৩৪৩ অঞ্চলে '১০০ দিনের টাকার সহায়তা শিবির'- এর আয়োজন করতে হবে ও বঞ্চিতদের ফর্ম দিয়ে সেগুলো পূরণ করার জন্য সাহায্য করতে হবে।
দলের নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত প্রধান কিশোর রায়চৌধুরী ও অঞ্চল সভাপতি ফাল্গুনী গোস্বামীর উদ্যোগে গত ১৮ ই ফেব্রুয়ারি সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে আউসগ্রাম-১ নং ব্লকের বিল্বগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়। শিবির থেকে প্রায় ৫০ জন বঞ্চিত প্রয়োজনীয় ফর্ম সংগ্রহ করে এবং সেগুলি পূরণ করে জমা দেয়। প্রথম দিন হলেও শিবিরে পর্যাপ্ত ভিড় দেখা যায়। জানা যাচ্ছে আগামী ২৫ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই শিবির চলবে।
পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতি ছাড়াও শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিল্বগ্রাম অঞ্চল তৃনমূল কৎগ্রেস যুব সভাপতি বান্টি দাস, রমেশ বাউরী, সমীর দত্ত, দীপু মণ্ডল সহ অন্যান্য তৃণমূল কর্মীরা। শিবির পরিদর্শন করে যান স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার ও আউসগ্রাম-১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরূপ সরকার। তারা দলীয় কর্মীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যান।
কিশোর বাবু বলেন - দলীয় নির্দেশে ও বিধায়কের পরামর্শে আমরা এই শিবিরের আয়োজন করেছি। আমাদের লক্ষ্য দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেক বঞ্চিত যাতে তাদের প্রাপ্য মজুরি পায় সেদিকে খেয়াল রাখা। দলের নির্দেশ একজন বঞ্চিত যেন বাদ না যায়।